ডুমুর ফল এর গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
ডুমুর ফল যে শুধুই গুণে ও মানে গুণান্বিত তা নয়। এটি বাঙালির খাবারে ভাতের সাথে সবজি হিসেবেও অনেক সুপরিচিত ও সুস্বাদু।অবশ্যই এটি স্বাদে ও গুনে অতুলনীয়।
সূচিপত্রঃ ডুমুর ফল এর গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
- ডুমুর ফল এর পরিচিতি
- ডুমুর ফল এর প্রকারভেদ
- ডুমুর ফল কেন খাবেন
- ডুমুর ফল খাওয়ার সময় লক্ষণীয় বিষয়
- ডুমুর ফলই কি ত্বীন ফল নামে পরিচিত
- ডুমুর ফল এর কার্যকারিতা বা উপকারিতা
- ভেজানো ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা
- ডুমুর বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
- ডুমুর ফল এর ধর্মীয় গুরুত্ব
- সকালে খালি পেটে খাবার উপকারিতা
- ডুমুর ফল কতটুকু খাওয়া উচিত
- শেষকথাঃডুমুর ফল এর গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
ডুমুর ফল এর পরিচিতি
ডুমুর ফল এর পরিচিতি আপনাকে জানতে হবে।শুরুতে আপনি জানতে পারলেন যে এটি শুধুই ফল
নয় এটি আমাদের বাঙ্গালীদের ঘরে সবজি হিসেবেও খাওয়া হয়। এই ফলের রয়েছে নানা
গুনাগুন।ডুমুর ফল আমাদের নানা রোগ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। এবং সাধারণত একটি
জনপ্রিয় শুষ্ক ফল। এটি আকারে খুব বড় নয়। ডুমুর ফলের অপর আরেকটি
নাম আঞ্জির। আঞ্জির আরবি শব্দ।
ডুমুর ফলে রয়েছে অত্যাধিক খাদ্য শক্তি। এটি যেমন আমাদেরকে রোগ থেকে দূরে সরিয়ে
রাখে,ঠিক তেমনি এটি আমাদেরকে নানা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে। ডুমুরেরভেতরটা নরম। এর উপরে পাতলা আবরণ রয়েছে যা সবুজ রঙের। ডুমুর ফলকে
অনেকে সবজি হিসেবে কাঁচায় খায় আবার অনেকে ড্রাই ফল হিসেবেও খায়।
ডুমুর ফল এর প্রকারভেদ
ডুমুর ফল এর প্রকারভেদ।বাংলাদেশের যে ডুমুর পাওয়া যায় সেগুলো আকারের ছোট। এবং
এই ডুমুরের আরেক নাম কাকডুমুর। কাক ডুমুর আকারে ছোট হওয়ায় এটি সাধারণত খাওয়ার
অনুপযুক্ত। এই কাকডুমুরের গাছ বাংলাদেশের যেখানে সেখানে আগাছার মত অযত্নেই বেড়ে
ওঠে। এটি অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়ার নানা জায়গায় ছোট গাছ আকারে দেখতে পাওয়া
যায়।
সাধারণত বিভিন্ন পশুপাখির মাধ্যমে প্রজনন হয়ে থাকে। তবে এই কাকডুমুর অনেকেই
তরকারি রান্না করে খেয়ে থাকে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে পাওয়া ডুমুর বা আঞ্জির ফল
জনপ্রিয় ফল হিসেবে পৃথিবীর সব স্থানে খাওয়া হয়ে থাকে।আঞ্জির নামটি
হিন্দি,উর্দু,ফার্সি ভাষায় বলা হয়ে থাকে। এই গাছের আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্য হলেও
এটি পর্তুগাল থেকে আফগানিস্তানেও পাওয়া যায়।
এছাড়াও তরকারি হিসেবে খাওয়া হয় আরেক প্রজাতির ডুমুর রয়েছে যার নাম যজ্ঞ ডুমুর
বা জগডুমুর। এছাড়াও রয়েছে আরও নানা প্রজাতির ডুমুর। যেমন পিপল যার বৈজ্ঞানিক
নাম Ficus Racemosa. এছাড়াও রয়েছে আরও নানা প্রজাতির ডুমুর। যা আমরা সুসারে
তরকারি হিসেবে রান্না করে খেয়ে থাকি। এবং পুষ্টি গুণের দিক থেকে অনন্য।
ডুমুর ফল কেন খাবেন
ডুমুর ফল কেন খাবেন? আমরা শুরুতে জানতে পেরেছি যে ডুমুর ফল একটি ভেষজ ফল। ভেষজ ফল
হবার কারণে এর রয়েছে অত্যাধিক গুণাবলী। প্রাচীনকাল থেকেই ডুমুর শুধুমাত্র যে ফল
হিসেবে খাওয়া হয় তা ন। ডুমুরের পাতা, কাঁচা ও পাকা ফল হিসেবে,বাকল,
জড়,নির্যাস,ডাল প্রভৃতি ব্যবহার করা থাকে। ডুমুর আপনার শরীরে নিয়ে আসবে ইতিবাচক
নানান পরিবর্তন।
ডুমুর আপনাকে ভেতর থেকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শক্তি দিবে। ডুমুরএকটি ঔষধী
গুন সম্পন্ন খাবার। তবে ডুমুর খাওয়ার সময় যদি আপনার বিশেষ কোন বাধ্যবাধকতা থেকে
থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।কারণ সব ভালই সবার জন্য ভালো
হয় না সব সময়। ডুমুর শরীরকে উষ্ণ রাখে। তাই গরম কালে ডুমুর ফল বেশি
পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
ডুমুর ফল খাওয়ার সময় লক্ষণীয় বিষয়
ডুমুর ফল খাওয়ার সময় লক্ষণীয় বিষয় হলো যে,অবশ্যই ডুমুর ফল আমাদের শরীরের জন্য
অনেক উপকারী। কিন্তু উপকারের আগে আমাদের সমস্যাগুলোর কথা জেনে নেয়া উচিত। কারণ
আপনার যদি এই সমস্যাগুলো থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ডুমুর ফল এড়িয়ে যেতে হবে।
সাধারণত ডুমুর ফল খেলে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না।
তবে যাদের পিত্তথলির সমস্যা রয়েছে এবং কিডনিজনিত রোগ রয়েছে তাদের খুব সামান্য ডুমুর খাওয়া উচিত। কারণ বেশি পরিমাণে খেলে এ সকল রোগের মানুষদের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বা কতটুকু খাওয়া যাবে তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে বুঝে নিয়েই খাওয়া উচিত। অনেক সময় ডুমুর স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে ।শ্বেত রক্ত কণিকার ওপরে প্রভাব ফেলতে পারে।
ডুমুর ফলই কি ত্বীন ফল নামে পরিচিত
ডুমুর ফলই কি ত্বীন ফল নামে পরিচিত? ডুমুর ফল যেমন আঞ্জির ফল হিসেবে পরিচিত ঠিক
তেমনি ডুমুর ফল বাংলাদেশের ত্বীন ফল হিসেবেও পরিচিত। ইংরেজিতে ত্বীন ফলের নাম The
Fig. বৈজ্ঞানিক নাম Ficus carica. আরবি ভাষায় ডুমুর ফলকে ত্বীন ফল বলা হয়ে
থাকে। ধর্মীয়ভাবে দিন ফলের গুরুত্ব অনেক বেশি। এই ফলকে জান্নাতি ফল বলা হয়।
বাংলাদেশের ডুমুর ফলের থেকে মধ্যপ্রাচ্যের ডুমুর ফল সাধারণত আকারে বড় হয়ে থাকে। এবং দেশে থেকে সেখানকার ডুমুরের স্বাদও ভিন্ন। আমরা বড় বড় যে শুকনো ডুমুর গুলো দেখতে পায় সেগুলো সাধারণত দেশী নয়। দেশের বাইরে থেকে আনা হয়ে থাকে।এবং বাইরে থেকে আনা এ ডুমুর ফল ফলের দাম অনেক বেশি।
ডুমুর ফল এর কার্যকারিতা বা উপকারিতা
ডুমুর ফল এর কার্যকারিতা বা উপকারিতা রয়েছে।সুস্থ দেহের জন্য আমাদেরকে যেমন
প্রচুর শাকসবজি খাওয়া লাগে ঠিক তেমনি আমাদের অনেক শুকনো ফলও খাওয়া লাগে। সুস্থ
থাকার জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় শুকনো ফল যোগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণএকটি বিষয়।
শুকনো ফল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।তার মধ্যে শুকনো ডুমুর অন্যতম। এই ধরনের শুকনো
ফলে যেমন রয়েছে ভিটামিন তেমন রয়েছে খনিজ পদার্থ।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ ডুমুর ফলে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন ও জিঙ্ক। ডুমুর ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের জন্য খুবই উপকা। যাদের পায়েসের সমস্যা রয়েছে ডাক্তার তাদেরকে ডুমুর খেতে বলেন। ডুমুরে থাকা পুষ্টিগুণ মলত্যাগ স্বাভাবিক করে। ডায়রিয়া রোগ থেকে দূরে রাখে। এমনকি অন্য কোন পেটের গোলযোগও হতে দেয় না।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ এই সময়ে এসে অধিকাংশ মানুষের উচ্চ রক্তচাপ একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায় সবারই এখন উচ্চ রক্তচাপের অসুবিধা রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের জন্য ডুমুর একটি অত্যন্ত উপকারী ফল। কারণ ডুমুরে রয়েছে এমন একটি গুন যা আমাদের শরীরে থাকা সোডিয়াম পটাশিয়ামকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ হবার সম্ভাবনা থাকে না।
- রক্তে হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখেঃ আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণের আয়রন প্রয়োজন হয়। এবং এই আয়নের চাহিদা মেটাতে সক্ষম ডুমুর। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন।আয়রন আমাদের শরীরে রক্তের পরিমাণকে বাড়িয়ে সুস্থ রাখে। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে আমাদের অনেক রকমের অসুবিধা দেখা দেয়। আর ডুমুরে থাকা আয়রন আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিন কে বাড়ায়।
- ত্বককে সুন্দর রাখেঃ ডুমুর ফল যেমন খেতে সুস্বাদু। তেমন এতে রয়েছে নানা রোগেরও ঔষধ। ডুমুর ফল খেলে শরীরে ফোঁড়া ও চর্মরোগ কম হয়। কারণ ডুমুর ফলে রয়েছে এই রোগ নিরাময়ের একটি বিশেষ গুণ। আর আমাদের শরীরে যখন ফোঁড়া ও চর্মরোগ দেখা দেয় তখন আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট ড়া। তাই ত্বক কে সুন্দর রাখতে ডুমুর ফল খাওয়া উচিত।
- ডুমুর ফল এ রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ ডুমুরে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যার নাম পলিফেনল। যা শরীরে টিস্যু গুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে পুনর্গ গঠিত হতে সাহায্য করে। ডুমরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। শরীর এবং চেহারায় বয়সের ছাপ দেরীতে নিয়ে আসে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ শরীরে যখন শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় তখন তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকা অত্যাধিক জরুরী। আমাদের শরীরে যেন ইনসুলিন এর পরিমাণ বেড়ে না যায় সেই দিকে খেয়াল রাখা উচিত।আর ডুমুর ফলে রয়েছে ফাইবার। যা রক্তে শর্করার ব্যবস্থাপনাতে ভূমিকা রাখে। ডুমুরের রয়েছে এমন একটি গুণাবলী যা রক্তে শর্করার পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করে আমাদেরকে সুস্থ রাখে।
- শক্তিশালী হাড় গঠন করেঃ আমাদের শরীরে হাড় একটি অতি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। একটি বয়সের পরে আমাদের শরীরে হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়ে যায়। যা আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এবং সময় থাকতে হাড়ের প্রয়োজনীয় যত্ন নেয়া অত্যাধিক জরুরী। ডুমুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের হাড়কে শক্ত করতেসাহায্য করে।
- ডুমুর ফল হার্ট সুস্থ রাখেঃ আমাদের শরীরে হার্ট কে সুস্থ রাখার জন্য রেডিক্যাল দূর করা অতি প্রয়োজন। আর এই রেডিক্যাল ফ্রী দূর করতে সাহায্য করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডুমরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এটি করতে সাহায্য করে। ফলে আমাদের হার্ট সুস্থ থাকে। এছাড়াও ডুমুর কার্ডিও ভাসকুলার রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ ডায়েটে ডুমুর একটি অত্যন্ত মূল্যবান খাবার। অতিরিক্ত ওজন ঝরাতে চাইলে ডায়েটে আপনাকে অবশ্যই ডুমুর রাখতে হবে। ডুমুরে থাকা ফাইবার আপনার শরীরে পাচনতন্ত্র কে বজায় রাখে। পেট ভরা রাখে। ক্ষুধা কম লাগে ফলে খাবারের চাহিদা কমে যায়। যা আপনাকে অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
- পুরুষদের শক্তি বৃদ্ধি করে:সুস্থ জীবন পেতে হলে অবশ্যই ডুমুর খাওয়া উচিত। বিশেষ করে পুরুষদের। রোজ রাতে দুধের সঙ্গে একটা ডুমুর খেলে আপনি হবেন শক্তিশালী। ডুমুরের রয়েছে জিঙ্ক। যা পুরুষদের শুক্রাণু বৃদ্ধি করে। পুরুষদের বিশেষ সমস্যায় এই ফল অনেক উপকারী। জিংকের উপস্থিতির কারণে ডুমুর ফল পুরুষদের যৌন শক্তিকে বৃদ্ধি করে।
ভেজানো ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা
ভেজানো ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক।ডুমুর একটি ঔষধি ফল। এতে রয়েছে নানা ভেষজ
গুণাবলী। যা আপনার শরীরের নানা পুষ্টিগুণ পৌঁছে দেয়। এটি কাঁচা,পাকা এবং শুকনো
তিন অবস্থাতেই খাওয়া যায়। এক এক অবস্থায় এর গুনাবলীও ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে
শুকনো ডুমুরের গুণাবলী অনেক বেশি। কাঁচা ডুমুর আমরা তরকারি হিসেবে খেয়ে থাকি।
এতে রয়েছে একরকম গুণাবলী।
কিন্তু শুকনো ডুমুরকে যদি আপনি সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর সকালে খালি পেটে খেলে, এর পুষ্টিগুণ আপনি সম্পূর্ণভাবে পাবেন। অবশ্যই দুই থেকে তিনটি ডুমুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনি এতে কিছু মধু মিশিয়ে দিতে পারেন। আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন এটি খেতে হবে। সুস্থতা বাড়ানোর সহজ উপায় হিসেবে আপনি ডুমুরকে বেছে নিতে পারেন।
ডুমুর বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
ডুমুর বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়? ডুমুর ফল হিসেবে আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গাতেই পরিচিত। বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবঞ্জ, রাঙ্গামাটি, পার্বত্য এলাকা ও আরো নানা জায়গায় বেশি জন্মে থাকে। সিলেট, মৌলভীবাজার ও টাঙ্গাইলেও ডুমুর পাওয়া যায়। বলতে গেলে গ্রামের এদিক সেদিক এই গাছ আপনা আপনি হয়ে থাকে।
ডুমুরের কাঁচা ফল আমাদের দেশে সবজি হিসেবে অনেক বেশি প্রসিদ্ধ। আমরা ডুমুর ফল
তরকারি হিসেবে অনেক রকম করে রান্না করে খেয়ে থাকি। তাই এটি সবজি বাজারেও পাওয়া
যায়।এই ফলের সবজি অতি উন্নত একটি সবজি। ডুমুর সবজি হিসেবে এবং ভর্তা হিসেবেও
খাওয়া হয়ে থাকে। তাইতো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সবজি বাজারে এটি বিক্রি করা
হয়।
ডুমুর ফল এর ধর্মীয় গুরুত্ব
ডুমুর ফল এর ধর্মীয় গুরুত্ব অনেক বেশি।ডুমুর ফলকে জান্নাতি ফল বলা হয়। তাই তো
ডুমুর ফলের ধর্মীয় গুরুত্ব অনেক বেশি। ডুমুর ফলকে আরবিতে ত্বীন ফল বলা হয়।এই
ত্বীন ফলের উপর একটি সূরাও আছে। যা ত্বীন সূরা নামে পরিচিত। এই সূরায় ডুমুর ফলকে
আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নিয়ামত বা রহমত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এই সূরা পড়লেই
বোঝা যায় যে,ধর্মীয়ভাবে এই ফলের গুরুত্ব কতটুকু।
এছাড়াও বাইবেলেও ডুমুর ফলকে গুরুত্বের সাথে বর্ণনা করা হয়েছে। বাইবেলের এই ডুমুর ফলকে নিয়ে একটি গল্পও আছে। বলা হয়ে থাকে যে, একদিন ক্ষুধার্ত যীশু ঝুমুর গাছ দেখলেন।যেই গাছে কোনো ফল ছিল না। ফল না থাকার জন্যজন্য তিনি সেই ডুমুর গাছকে অভিশাপ দেন।বৌদ্ধ ধর্মেও ডুমুর ফলের গাছকে পবিত্র বলা হয়েছে।
সকালে খালি পেটে খাবার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে খাবার উপকারিতা আপনাকে জানতে হবে।ডুমুর ফল আমরা সবজি হিসেবে যেকোনো সময়ই খেতে পারি। কিন্তু তাতে থাকে তেল ও মশলা। আমরা প্রায় সকলেই বাদাম এবং কিসমিস খাওয়ার গুণাবলী সম্পর্কে জানি। এর সাথে আমরা শুকনো ডুমুর কেউ যোগ করে খেতে পারি। খালি পেটের ডুমুর সেবন আপনাকে দিবে সুন্দর ও সুস্থ শরীর এবং মন। অবশ্যই খালি পেটে ডুমুর খেলে আপনি ভালো ফল পাবেন।
গবেষণা করে দেখা গেছে যে, পুষ্টির ভাণ্ডার হল এই শুকনো ডুমুর। শুকনো ডুমুরের নিয়মিত সেবন আপনাকে করবে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে। এই শুকনো ডুমুর কিসমিসের মতোই সারারাত ভিজিয়ে রেখে খাওয়া উচিত। তাহলেই আমরা এর পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণরূপে পাব। ডুমুরে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, এন্টিঅক্সিডেন্ট,জিঙ্ক, ফাইবার ইত্যাদি।
ডুমুর ফল কতটুকু খাওয়া উচিত
ডুমুর ফল কতটুকু খাওয়া উচিত? ডুমুর ফলের পুষ্টিগুণ এবং গুণ অনেক বেশি। এটি আমরা
জেনে হোক আর না জেনে হোক,বেশি করে খেয়ে থাকি সবজি হিসেবে। কোন কিছুর পুষ্টিগুণ
বেশি আছে মানে এই নয় যে,সেটি আমরা অনেক বেশি খেতে পারব। আমাদের শরীরের চাহিদা
অনুযায়ী কোন কিছু খাওয়া উচিত। তবেই আমরা এর ভালো ফল পাব। তা না হলে এর ভালো দিক
এর থেকে খারাপটাই আমরা পাব।
তাই বেশি খাবার ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য আমাদের অবশ্যই সকল কিছুই পরিমাপ মত খাওয়া
উচিত। ডুমুরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। বেশি খেলে ডায়রিয়া হতে পারে।
ডুমুর ফলে রয়েছে খেজুর বাদামের মতোই বেশি ক্যালোরি। ওজন কমাতে চাইলে দুই তিনটার
বেশি খাওয়া যাবে না তাই দুই তিনটার বেশি খাওয়া যাবে না। ডুমুর বেশি খেলে অনেক
সময় এলার্জির সমস্যা দেখা যায়।
শেষকথাঃডুমুর ফল এর গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
ডুমুর ফল ঔষধি ফল। এর ভেষজ গুনাগুলি অনেক বেশি। আমি নিজেও ডুমুর ফল খেতে অনেক
পছন্দ করি।এর সবজিও ওনেক স্বাদের। আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিনের খাবারে
ডুমুর ফল রাখা। বিশেষ করে প্রতিদিন দুই তিনটা শুকনো ডুমুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে
খাওয়া উচিত। এটি আমি নিজেকে খেয়েও অনেক উপকার পেয়েছি।
ধর্মীয়ভাবে ডুমুর ফলকে জান্নাতি ফল বলা হয়েছে। এই কথা থেকে বুঝতে আর বাকি থাকে না যে, ডুমুর ফল এর গুনাবলী কত বেশি।এর ঔষধি গুন সত্যিই অনেক অসাধারণ। ডুমুর ফল আপনাকে শুধু সুস্থই রাখেনা। সুন্দরও রাখে নানাভাবে। এটি আপনার চুল, ত্বক কে সুন্দর রাখে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে আপনাকে ভেতর থেকে করে তোলে শক্তিশালী।
রওশন ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url