হেলেঞ্চা শাকের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

হেলেঞ্চা শাকের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা অনেক।বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের প্রায় সব জায়গায় এটি অতি পরিচিত।এটা জলজ বা ভেজা জায়গায় অথবা কাদা পানিতে বেশি জন্মায়। শীতের শুরুর দিকে এই শাকের ফুল ফোটে এবং এর রং সাদা। গ্রাম অঞ্চলের মানুষ এই শাক খেতে অনেক পছন্দ করে।
হেলেঞ্চা-শাকের -পুষ্টিগুন
হেলাঞ্চা শাকের পুষ্টিগুন অনেক ও খেতে কিছুটা তিতা।হেলেঞ্চা শাক ভাজি করে এবং ঝোল করে ও রান্না করে খাওয়া হয়।গ্রামাঞ্চলে এই শাকে ডাল মিশিয়ে বড়া করেও খাওয়া হয়।এতে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ যা আপনাকে দিবে না সমস্যার সমাধান এবং সুস্থ শরীর। তাই এর পুষ্টিগুণ জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

সূচিপত্রঃ হেলেঞ্চা শাকের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

হেলেঞ্চা শাকের পুষ্টিগুণ

হেলেঞ্চা শাকের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।এতে রয়েছে শতকরা ০.২ ভাগ ফ্যাট,৫.৫ ভাগ শর্করা,২.৯ ভাগ প্রোটিন,৭১% ভিটামিন সি,৪১ মিলিগ্রাম সোডিয়াম,৩৩০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ও ২.২ ভাগ লবণ।তাছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ।এই শাক পেইন কিলার হিসেবেও পরিচিত।

শরীরের বিভিন্ন ব্যাথা নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই শাকে রয়েছে নান ঔষধি গুণ।আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও এর অনেক গুণ পাওয়া গেছে।এই শাকে রয়েছে নানা বিস্ময়কর স্বাথ্য উপকারিতা।পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এই শাক আমাদের সকলেরই খাওয়া উচিত।

এই শাকের বর্ণনা

এই শাকের বর্ণনা পড়লে বোঝা যায় এটি ভারতের পূর্বাঞ্চলা ও বাংলাদেশের ডোবা পুকুর বা ভেজা জায়গায় অগভীর জলাশয়ের ধারে এই শাক হয়ে থাকে।এই গাছগুলি অল্প পানিতে ভেসে থাকে।এই শাকে আবার ফুলও হয়।এর ফুলের রং সাদা।আকারে ছোট ছোট।কান্ডের শীর্ষে গুচ্ছ হয়ে এর ফুল ফোটে।বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এই শাক এমনি এমনিই হয়ে থাকে।তাই বাংলাদেশে এটি অনাবাদি শাক হিসেবেই পরিচিত।

এই গাছের পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে।বাংলাদেশে এটি হিংচা বা হেলেঞ্চা শাক হিসেবে পরিচিত।হেলেঞ্চা গাছ লম্বায় ৩০ থেকে ৩৬ সেন্টমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।এর পাতার দৈর্ঘ্য ২ থেকে ৭ সেন্টমিটার পর্যন্ত হয়।এই শাকের ইংরাজি নাম Buffalo Spinach.এটি একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ।হেলেঞ্চা শাক তিতির শাক,তিতির ডাটা,তিতা ডগা,হিমলোচিকা,হেলচী,হিংচা ইত্যাদি নামে পরিচিত।

হেলেঞ্চা শাক এর ঔষধি গুণ

হেলেঞ্চা শাক এর ঔষধি গুণ অনেক।হেলেঞ্চা শাককে নানাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এর ঔষধি গুণের জন্য।এই শাককে  আয়ুর্বেদে ক্ষুধাবর্ধক,ব্যথানাশক,জীবানুনাশক,জ্বরনাশক,পিত্তনাশক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।হেলেঞ্চা ভেষজ চিকিৎসায় কোষ্ঠকাঠিন্য,হাপানি,স্নায়ুরোগ,বাতের ব্যথা,হাত পা জ্বালা ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।আধুনিক বৈজ্ঞানিক পাওয়া গেছে যে এই শাকে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট,ডায়রিয়া হ্রাস,স্নায়ু উত্তেজনা প্রশমন ইত্যাদি।


কবিরাজরা চর্মরোগ নিরাময়ে এই শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন।এই শাক নিয়মিত খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ে।দীর্ঘদিনের জ্বরের পরে এই শাক দিয়ে মাছের ঝোল খেলে মুখে রুচি বাড়ে।এই শাকে এন্টি-অক্সডেন্ট থাকায় ক্যান্সারের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।মাথার যন্ত্রনায় এই শাক বেটে কপালে লাগালে ব্যথা কমে।স্নায়ুরোগের ভেষজ চিকিৎসায় এই শাক ব্যবহার করা হয়।এই শাক নিয়মিত খেলে ব্লাড সুগার কমে।চর্মরোগ,ঘামাচি,অরুচিতে,হাত পা জ্বালা ব্রঙ্কাইটিস রোগেও হেলেঞ্চা অনেক উপকারি।
হেলেঞ্চা-শাকের -পুষ্টিগুন

হেলেঞ্চা শাকের উপকারিতা

হেলেঞ্চা শাকের উপকারিতা যেমন আছে তেমন হেলেঞ্চা শাক এর পুষ্টিগুন আছে।এই শাক একটি ভেষজ উদ্ভিদ।এতে রয়েছে নানা গুন ও উপকারিতা।এটি আমাদের যেমন রান্নায় বৈচিত্র্যতা আনে ঠিক তেমনি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতাতেও রয়েছে মারাত্মক বৈচিত্র্যতা।আমাদের নানাবিধ রোগ ও ব্যাথার উপশম রয়েছে এই শাকে।

  1. ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধঃশীতকালে গায়ে কাটা ও গরমে ঘামাচি এই দুইটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়ায়।প্রতিদিন সকালে এই শাকের রস তিন চার চামচ করে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।এছাড়াও এর পাতা সামান্য পানি দিয়ে বেটে সারা শরীরে মাখলে উপকার পাওয়া যায়।
  2. যকৃৎ দূর্বল হলেঃযকৃৎ দূর্বল হলে নানা ধরণের রোগ দেখা যায়।১০০ গ্রমা শকে ১৫০মিলিলিটার পানি মিশিয়ে পরিমাণমত লবণ মিশিয়ে সেদ্ধ করতে হবে।পানি ফুটে এক কাপ পরিমাণ হলে পাত্রটি চুলা থেকে নামিয়ে নিতে হবে।ঠান্ডা হলে খাবার খাওয়ার আগে সামান্য পরিমাণে সরিষার তেল মিশিয়ে খেতে হবে।অবস্থা বুঝে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত এটি খেতে হবে।তাহলে যকৃৎ ভাল থাকবে।
  3. কোমরের ব্যথা ভাল হয়ঃকোমরের নিচে ব্যথা বা যন্ত্রনা,পায়েরপেশিতে রাতেরবেলা টান ধরলে সকালে খালি পেটে বেশ কিছুদিন হেলেঞ্চা শাকের রস তিন চা চামচ গরম করে খেলে ব্যথা ভাল হয়ে যায়।
  4. পিত্ত বাড়লেঃপিত্ত বাড়লে হেলেঞ্চার পাতা বেট ৩০ মিলিলিটার রসের সাথে ৫০ মিলিমিটার গরু কিংবা ছাগলের দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে পিত্ত স্বাভাবিক হবে।গনোরিয়া রোগের জন্য একই পরিমাণে খেলে এই রোগ ভাল হয়।
  5. বসন্ত রোগের সমাধানঃপ্রাথমিক অবস্থায় অর্থাৎ দু একটি গুটি দেখা পাওয়া মাত্রই দেড় থেকে দুই গ্রাম গুঁড়ো দুধের সাথে হেলেঞ্চা শাকের রস আধা কাপ ভালভাবে মিশিয়ে খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
  6. রক্ত দূষিত হলেঃরক্ত দূষিত হলে ২০ মিলিলিটার পাতা ও ডাঁটা বাটা রস এক চামচ চিনির সথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত রক্ত পরিষ্কার হয়।জিহ্বায় মোটা সাদা প্রলেপ পড়লে খাবারে অরুচি হয়।কিছুদিন হেলেঞ্চার রস গরম করে খেলে ভাল হয়ে যায়।এছাড়াও যারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগে থাকেন তারা যদি সকালে ২ চামচ হেলেঞ্চার রস,২ চামচ কলমি শাকের রস,২ চামচ মধু মিশিয়ে রোজ সকালে খেলে নিম্ন রক্তচাপ স্বাভাবিক হবে।
  7. গর্ভবতী ও পিরিওডের সমস্যায় হেলেঞ্চা শাকঃহেলেঞ্চা শাকে প্রচুর পরিমণে খণিজ আর ভিটামিন যুক্ত।এছাড়াও এতে রয়েছে জিঙ্ক,ফলিক এসিড,সালফার,আয়রন।যা শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়ায়।ফলে গর্ভতী মহিলাদের জন্য এটি খুবই উপকারীএবং যেসব মেয়েদের পিরিয়ডের সমস্যা আছে তাদের এই শাক খাওয়া উচিত।আবার অনেকে গর্ভাবস্থায় এই শাক খেতে বারণ করেন সন্তান জন্মদানে বাধা আসবে মনে করে।ডাক্তাররা তাই গর্ভবতী ও পিরিওডের সমস্যায় ভোগা মেয়েদের এই শাক খেতে বলেন।সন্তান জন্মদানের পরে মায়েদের শরীরে অনেক নারীর লৌহের ঘাটতি দেখা যায়।এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে হেলেঞ্চা শাক।তবে যে কোনো কিছু খাবার আগে অবশ্যই নিশিচত হবার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই খাওয়া উচিত।
  8. সর্দি-কাশিতে হেলেঞ্চা ঃসর্দি কাশির সমস্যা দেখা দিলে এই শাকের রস বা সেদ্ধ করে ভাতের সাথে খেলে অনেক উপকার করে।সরররদি কাশি নিরাময়ের এই প্রাকৃতিক মহাঔষধ আমাদের জন্য অনেকটা আর্শীবাদ স্বরূপ।কারণ ঔষধ এর পার্শ্বপ্রতিকক্রয়য়া থাকলেও এই প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ঔষধি গুণের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রীয়া নেই।যা আমরা ছোট থেকে বড় সকলেই গ্রহণ করতে পারি।

এই শাকের আবাস ও বৈজ্ঞানিক নাম

হেলেঞ্চা শাকের আবাস ও বৈজ্ঞানিক নাম আমাদের জানা উচিত। এর আবাস ক্রান্তীয় অঞ্চলের জলাশয়,ডোবা,নর্দমা অগভীর জলে এই শাক জন্মায়।এর আদি নিবাস ভারতবর্ষ,বাংলাদেশ,ব্রাজিল,মায়ানমার,শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি।নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু আছে এমন অনেক দেশেই এই শাক জন্মায়।কান্ডের প্রতিটি গাঁট থেকে শিকড় বের হয়।এর পত্রফলক বল্লমাকৃতির।পাতার কিনারা সূক্ষ্ম খাঁজ কাটা।

গাছের শীর্ষে শীতকালে ছোট সাদা গুচ্ছ ফুল ফোটে।হেলেঞ্চা শাকের বৈজ্ঞানিক নাম Enhydra fluctuans যা Asteraceae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।এর ইংরেজি নাম Helencha,Buffalo spinach,Common Enhydra.

হেলেঞ্চা-শাকের -পুষ্টিগুন

এই শাক কোথায় পাওয়া যায় ও দাম

এই শাক কোথায় পাওয়া যায়? এই শাক কলমি শাকের মতই পানিতে ভেসে বেড়ায়,নোনা পানি ছাড়া বাংলাদেশের খাল-বিল,নদী,পুকুরে, ডোবায়,বাড়ির আশে পাশে ভেজা আর্দ্র জায়গায় জন্মায়।ভারতে অনেকে এই শাক কে হিমমোচিকাও বলে।হেলেঞ্চা শাক অনাবাদি হবার কারণে এটি আমাদের জন্য বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে অনেক বেশিই সহজলভ্য।তাই আমরা বাংলাদেশের প্রায় সব খানেই এই শাক পেয়ে থাকি।অনেকে এর গুনণাগুণ না জানার জন্য সহজভাবেই পাওয়া হেলেঞ্চা শাক এর পুষ্টিগুন থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে।

হেলেঞ্চা শাকের দাম জায়গা ভেদে  বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।এটি একটি অনাবাদি শাক।এক সময় ছিল যখন গ্রামে এই শাক এমনিই মানুষ জন তুলে এনে খেত।কিন্তু সময়ের সাথে সবকিছু ভীষণ রকম পরিবর্তনশীল।তাই এই পরিবর্তন শাকের দামেও এসেছে।কোথাও ১৫-২০ টাকা আটি।তো কোথাও ৫-১৫ টাকা আটি।আবার অনেকে হেলেঞ্চা শাক এর পুষ্টিগুন সম্পর্কে জানে না তাই এমনিও খায় না।এর চাহিদার তুলনায় অনাবাদি হলেও  নদীমাতৃক দেশ হওয়াই এই শাকের ফলন অনেক বেশি।তাই অনেকে হেলেঞ্চা শাককে গরুকে খাইয়ে দেয়।

হেলেঞ্চা শাকের কয়েকটি মাজাদার রেসিপি

হেলেঞ্চা শাকের কয়েকটি মাজাদার রেসিপি আছে। আমরা বাঙালিরা অত্যাধিক ভোজন রসিক।তাই আমাদের শুধু পুষ্টিগুণ  হলেই চলে না।আমাদের লাগে স্বাদও।এই শাক শুধুই পুষ্টিগুণে ভরা তা না।এটি স্বাদের দিক থেকেও অতুলনীয়।রান্নাটাও এক ধরণের শিল্প।রান্নার শিল্প আমরা এর স্বাদের এবং পরিবেশনের মাধ্যমে তুলে ধরতে পারি।

তাই তো হেলেঞ্চা শাক এর পুষ্টিগুন এর পাশাপাশি আমি আপনাদের কাছে এর কিছু সাধারণ কিন্তু মুখে রুচি আনার মত অতুলনীয় স্বাদের কয়েকটি মজার রেসিপিও নিয়ে হাজির হলাম।যদিও আমরা সবাই জানি।তবুও দিলাম'আপনাদের কাছে যদি এরকম মজার কিছু রেসিপি থাকে তাহলে আমাকে নিচের দেয়া যোগাযোগে মেসেজ করে বা কমেন্টে জানাতে পারেন।

  1. চিংড়ি দিয়ে হেলেঞ্চা শাকঃচিংড়ি মাছ এমন একটি মাছ যা কিনা সকল কিছুর সাথে গিয়ে স্বাদ কে অতুলনীয় করে গড়ে তুলে।হেলেঞ্চা শাক কুচি করে কেটে,ধুয়ে যদি বেশি করে সরিষার তেল,পেঁয়াজ,রসুন,শুকনা মরিচ ফোঁড়ন দিয়ে নামানোর আগে ভাজা চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করা হয় এবং গরম গরম ভাতে কাঁচা সরিষার তেল মাখিয়ে কাঁচা মরিচ দিয়ে খেতে অনেক মজা।
  2. হেলেঞ্চা বড়াঃহেলেঞ্চা শাকের পাকোড়া অনেক মজাদার একটি খাবার।এই শাক ধুয়ে সুন্দর করে বেশি পরিমাণে বেটে বা কুচি করে সারা রাত  এক সাথে ভিজিয়ে রাখা মসুর,খেসাড়ি ও মটর ডালের বেটে নিতে হবে।তাতে লবণ,হলুদ,কাঁচা মচা,আদা,বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে মাখিয়ে ডুবো তেলে মুচ মুচে করে ভেজে নিলেই তৈরী হয়ে যাবে মজাদার বিকালের নাস্তা হিসাবে হেলেঞ্চা পাকোড়া।এছাড়াও এটি গরম ভাত বা খিচুড়ি দিয়েও খেতে মজা হয়।
  3. মৌরলা মাছ দিয়ে হেলেঞ্চাঃমৌরলা মাছ দিয়ে এই শাক রান্না অনেক মজার হয়।১ আঁটি শাকের সাথে ১০০ গ্রাম মৌরলা মাছ নিতে হবে।লবণ,হলুদ দিয়ে মাখানো পরীষ্কার মাছ কে ভেজে নিতে হবে।তারপর গরম সরিষার তেলে লবণ, পেয়াজ,রসুন,কাঁচা মরিচ ফোড়ন দিয়ে কুচি করা শাক দিয়ে দিতে হবে।তারপর শাক ও শাকের ডাটা নরম হয়ে আসলে শাকের মধ্যে ভাজা মাছ ও সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।মাখা মাখা হয়ে গেলে তৈরী সাধারণ রেসেপিতে মজাদার হেলেঞ্চা মৌরলা মাছ।
  4. পুঁটি মাছ দিয়ে হেলেঞ্চাঃহেলেঞ্চা শাক দিয়ে ভাজা পুঁটি মাছ খেতে অনেক মজা।এটি গ্রাম বাংলার একটি সাধারণ খাবার।সাধারণ হলেও এটি অনেক সুস্বাদু।লবণ,হলুদ মাখানো ভাজা পুঁটি মাছ ফোঁড়ন দেয়া শাকে দিয়ে ঝোল রান্না করে খেতে বেশ স্বাদের।মুখের রুচিরও পরিবর্তন হয়।
  5. সাধারণ হেলেঞ্চা শাক ভাজিঃএছাড়াও এই শাক কুচি করে লবণ হলুদ দিয়ে অল্প পানিতে সেদ্ধ করে নিয়ে তেলে পেয়াজ,রসুম,কাঁচা মরিচ ফোঁড়ন দিয়ে তৈরী করা অতি সাধারণ মুখরোচক শাক বাজি।
  6. কুমড়ো বড়ি দিয়ে শাকঃকুমড়োর বড়ি রাজশাহী অঞ্চলের বিখ্যাত ও সুস্বাদু একটি খাবার এই বড়ি হেলেঞ্চা শাকের সাথে রান্না করলে অনেক ভাল লাগে।আমরা সাধারণ যেভাবে শাক ভাজি সেই ভাবেই করতে হবে।শুধু বড়ি আলাদা করে তেলে ভেজে একটু আধা ভাঙা করে শাকে হালকা পানি থাকা অবস্থায় দিয়ে দিতে হবে.১০ মিনিট অল্প আচে ভাপে রেখে দিলেই তৈরী বড়ি দিয়ে শাক।
  7. হেলেঞ্চা শাকের ভর্তাঃঅতি সাধারণ এই শাকের ভর্তা আমাদের শরীরে অনেক পুষ্টিগুণ পৌঁছে দেয়।এটি হালকা তিতা খেতে হলেও শরীরের জন্য উপকারী।অল্প পানিতে এই শাক সেদ্ধ করে পাটায় বেটে নিতে হবে।তারপর সরিষার তেল,লবণ,হলুদ,পেঁয়াজ কুচি,কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে মাখিয়ে গরম ভাতে খেতে অনেক স্বাদের।এই খাবার গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটায়।
  8. হেলেঞ্চা শাকের পাকোড়াঃহালকা কুসুম গরম পানিতে পরিমাণমত বেসন ও চালের গুড়ি দিয়ে লবণ,হলুদ,মরিচের গুড়া,সামান্য রসুন বাটা দিয়ে ভালভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে।তারপর হেলেঞ্চার গোটা শাক গুলি বেসন ও চালের গুড়ির ব্যাটারে ভালভাবে মিশিয়ে নিয়ে ডুবো তেলে ভাজলেই রেডি এই শাকের মুচমুচে পাকোড়া।

শেষকথাঃ হেলেঞ্চা শাকের পুষ্টিগুন

হেলেঞ্চা শাক এর পুষ্টিগুন আসলেই অনেক বেশি বলে মনে করি ।কারণ এই শাক আমি নিজেও খাই।শুধু এই শাকই নয়,যেকোনো শাকই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।কিন্তু এই উপকারী শাক টি আমরা বিনা পরিশ্রমেই অনেক সহজেই পেয়ে যাচ্ছি।এই শাক উৎপাদনের জন্য আমাদের কোনো পয়সা খরচও করতে হয় না।

অনেক গরীব মানুষও এই শাক সহজেই তুলে নিয়ে গিয়ে বাজারে বিক্রি করে তাদের জীবিকাও নির্বাহ করতে পারে।অতি ব্যয়বহুল ক্যান্সার রোগেরও আমরা সমাধান পাচ্ছি এই শাক থেকে।আমাদের প্রত্যেকের উচিত অন্য শাকের পাশাপাশি এই শাকও নিয়মিত খাওয়া।এমং খুব সহযে পাওয়া হেলেঞ্চা শাক এর পুষ্টিগুন কাজে লাগানো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রওশন ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url