ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা এবং পরিমাপ সম্পর্কে
সূচিপত্রঃ ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা এবং পরিমাপ সম্পর্কে
- ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
- প্রোটিন খাওয়ার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
- ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব কেন বেশি
- ডায়েটে কোন ধরনের প্রোটিন খাওয়া উচিত
- আপনার প্রোটিনের চাহিদা কতটুকু কীভাবে বুঝবেন
- ডায়েটে প্রোটিনের হজম শক্তির গুরুত্ব
- ডায়েটে প্রোটিনের অসুবিধা
- প্রোটিনের ঘাটতি জনিত সমস্যা ও অপুষ্টি
- শেষকথাঃডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা এবং পরিমাপ সম্পর্কে
ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা অনেক। মানুষের শরীরের সমস্ত কোষের
প্রধান উপাদান হচ্ছে প্রোটিন।প্রোটিন ছাড়া কোষের সঠিক বিন্যাস হয় না। কোষের
বিন্যাস বলতে সাধারণত পেশীর বিন্যাস কে বোঝায়। এর বাইরেও অঙ্গ, চুল এবং ত্বকের
সঠিক যত্ন ও টানটান ভাব ধরে রাখার জন্য প্রোটিনের গুরুত্ব ও চাহিদা অনেক বেশি।
মানুষের শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাব দেখা দিলে চুল পড়ে যায়, চুলের সঠিক
বেড়ে যাওয়া বাধা প্রাপ্ত হয় ও চুলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। এছাড়াও প্রোটিনের
অভাবে মানুষের শরীর দূর্বল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়। মানুষের
শরীরকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রোটিন অনেক বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে থাকে।
প্রোটিন খাওয়ার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা
প্রোটিন খাওয়ার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা আপনাকে ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করবে।আপনার শরীরে প্রোটিন খাওয়ার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা আসলেই অনেক বেশি। এটি মানুষের শরীরকে যেমন বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে,ত্বককে সুন্দর রাখে,চুলকে সুন্দর রাখে এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পেশীর উন্নতি ঘটায় তেমন মানুষের শরীরের বৃদ্ধি গঠন এবং সৌন্দর্যকেও ধরে রাখে।
১.প্রোটিন খাওয়ার চাহিদা কমিয়ে ফেলেঃপ্রোটিনে রয়েছে কোলেসিস্টকিনিন এবং পেপটাইড এর মত হরমোন যা মানুষের শরীরের ক্ষুধাকে কমিয়ে খাওয়ার চাহিদাকে হ্রাস করে ফেলে।ফলে মানুষ জাঙ্ক ফুড এবং ক্যালরি বেশি আছে এমন খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। কারণ প্রোটিনের ক্ষুধা নিবারণের যে শক্তি তা মানুষকে অন্য খাবার গ্রহণের ইচ্ছা থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।
২.আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করেঃপ্রোটিন হচ্ছে মানুষের শরীরের পেশী এবং টিস্যুগুলির প্রধান বিল্ডিং ব্লক। কারণ প্রোটিন মানুষের শরীরের পেশী গঠনে অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক কথায় প্রোটিন ছাড়া পেশীর পুনর্গঠন সম্ভব নয়। আর পেশী গঠন না হলে মানুষের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শরীরের সৌন্দর্য হারিয়ে যায়।
কোন জায়গায় আঘাত লাগলে সেটি সহজে ভালো হতে চায় না কারণ নতুন পেশি তৈরি হতে চায়
না। যখন আমরা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করি,তখন কোথাও আঘাত
লাগলে সেখানে সহজেই নতুন পেশী তৈরির ফলে সেরে যায়। সেই জন্য ক্রীড়াবিদ এবং
জিমনাস্টিকরা পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণের কথা বলে থাকেন।
৩.মেটাবলিজম বাড়িয়ে ফ্যাট ধরে রাখাকে কমায়ঃথার্মোজেনিক পুষ্টির মধ্যে প্রোটিনের গুরুত্ব অত্যাধিক বেশি। ডায়েটে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকে তখন মানুষের শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। মেটাবলিজম বৃদ্ধির ফলে মানবদেহের ক্যালোরি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কারণ মেটাবলিজম বৃদ্ধি মানেই হচ্ছে ক্যালরির ক্ষয়।
ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা এতই বেশি যে, এটি মানবদেহের
চর্বি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে ফ্যাট স্টোরেজ কমতে থাকে এবং
মানুষেরও ওজন ধীরে ধীরে কমতে থাকে। শুধুই কি ওজন কমে এর সাথে মানব দেহের শরীর
থেকে বিভিন্ন রোগেরও দমন হয়। এবং এভাবেই প্রোটিন মানব দেহকে সুস্থ রাখে।
৪.প্রোটিন মানবদেহের হাড়কে শক্ত করেঃমানবদেহে শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে হাড়। বয়সের সাথে সাথে এই হাড়ের ক্ষয়ও বাড়তে থাকে। আর হাড়ের এই ক্ষয়কে রোধ করার জন্য সবচেয়ে উপকারী এবং কার্যকারী পুষ্টির প্রধান উপাদান হচ্ছে প্রোটিন। প্রোটির মানবদেহের হাড়ের ক্ষয় রোধে অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন কোষের হাড়ের উন্নতি করে অস্টিওপোরোসিসের মত হাড়ের ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। যেমন দুধে রয়েছে ক্যালসিয়। ক্যালসিয়াম হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে বাধা প্রদান করে।মানবদেহে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি এবং ক্ষয় রোধ অতি গুরুত্বপূর্ণ।
৫.প্রোটিন মানবদেহে পেশীর সংখ্যা বৃদ্ধি করেঃডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা এর মধ্যে মানবদেহে পেশীর সংখ্যা বৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।স্বাভাবিক ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পেশী গঠন ও বৃদ্ধি না পেলে ওজন কমে যাবে ঠিকই কিন্তু চামড়া ঢিলা হয়ে যাবে। ফলে দেখতে কুৎসিত লাগবে। তাই পেশীর বৃদ্ধি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
তাই যারা অতিরিক্ত ওজন উত্তোলন করে থাকেন অথবা যাদেরকে আমরা বডি বিল্ডার হিসেবে
চিনে থাকি তারা অধিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করে থাকে। কারণ প্রোটিন মানবদেহে
পেশীর ক্ষয়রোধকে কমিয়ে শরীরের সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে। এক কথায় প্রোটিন
ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং পেশী বৃদ্ধি করে।
আরেকটু সহজ ভাবে বুঝিয়ে বললে, মানুষ যখন অতিরিক্ত ওজন উত্তোলন করে তখন
তার শরীরের পেশী দুমড়ে-মুচড়ে এক জায়গায় জড়োসড়ো হয়ে যায়। সেই জড়োসড়ো পেশী
গুলোকে আবার পুনরায় পুনর্গঠনের জন্য প্রোটিনের দরকার হয়। সেই দুমড়ে যাওয়া বা
ভেঙ্গে যাওয়া পেশী গুলোকে প্রোটিন পুনরায় গঠন করতে সাহায্য করে।
৬.ডায়েটে প্রোটিন উচ্চ রক্ত চাপ কমায়ঃডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতার মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, এটি উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে ও কমিয়ে রাখে। মূলত প্রোটিন রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, টাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে। সুতরাং রক্তচাপ সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।
মানবদেহে যতটুকু প্রোটিনের প্রয়োজন আছে মানুষ যদি ঠিক ততটুকুই প্রোটিন গ্রহণ করে
থাকে, তবে অধিকাংশ মানুষেরই স্ট্রোক এবং কিডনি রোগ থেকে মুক্তি মিলবে। কিন্তু
বেশিরভাগ মানুষের প্রোটিনের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝেনা। বা অনেকেই মনে করে থাকেন
যে, ডিম বা প্রোটিন খেলে হয়তো শরীরের জন্য ক্ষতি হবে। কিন্তু এটি আসলে ভুল
ধারণা।
৭.হার্টকে রক্ষার জন্য প্রোটিনের গুরুত্বঃমানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হচ্ছে হার্ট। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই এই হার্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এর প্রধান কারণ হচ্ছে প্রোটিনের অভাব।কারণ হার্ট মূলত প্রোটিন দিয়েই তৈরি হয়ে থাকে। প্রোটিনের অভাব মানে হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি।
আমরা যখন শরীর কে তার প্রয়োজনীয় প্রোটিন প্রদান করব, তখন আমাদের হার্ট
পুনর্গরঠিত হতে থাকবে। এর ফলে একটি বয়সের পরে আমাদের আর হার্টের কোন সমস্যা দেখা
দেবে না। তাই সমস্যা সৃষ্টির আগেই অল্প বয়স থেকেই আমাদের প্রতিনিয়ত পর্যাপ্ত
পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।
৮.প্রোটিন ওজন কমাতে সাহায্য করেঃঅধিকাংশ ডায়েটিশিয়ানরা ওজন কমানোর জন্য প্রোটিন খাওয়াকে অধিক পরিবারে গুরুত্বারোপ করে থাকেন। কারণ প্রোটিনে রয়েছে মানবদেহে ক্ষুধা কমানোর ক্ষমতা। এটি মেটাবলিজমককে বৃদ্ধি করে করে এবং অধিক পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখে।
আমাদের পেশীকে সংরক্ষণ করে এবং তৃপ্তি বাড়ায়। ওজন কমানোর কারণে আমরা অনেক খাবার
বাদ দিয়ে দেই। ফলে শরীর অনেক দূর্বল হয়ে পড়ে এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি থেকে
দূরে সরে যায়। তাই স্বাস্থ্যবিধ এবং ডায়েটেশিয়ানরা অধিক মাত্রায় প্রটিন গ্রহণ
করতে বলেন।
৯.প্রোটিন বয়সকে ধরে রাখতে সাহায্য করেঃপ্রোটিন পেশী পুনর্গঠন করে থাকে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধে ভূমিকা পালন করে শরীরকে শক্ত ও সুঠাম রাখে। ত্বক এবং চুলকে সুন্দর রাখে। ফলে আমাদেরকে দেখতে অনেক বেশী সুন্দর এবং বয়সের তুলনায় কম বয়সী লাগে।
বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকায় আমাদের মন ভাল থাকে। শরীরও ভালো থাকে। এর ফলে
শরীরের ক্ষয় কম হয়। আমরা অধিক সময় পর্যন্ত কর্মঠ থাকতে পারি। এর ফলে
আমরা ফিট থাকি। সুন্দর থাকি।ফলে আমাদেরকে দেখতে বয়সের তুলনায় কম বয়সী
লাগে।
ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব কেন বেশি
ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব কেন বেশি? চিকিৎসক,স্বাস্থ্যবিদ এবং ডায়েটিশিয়ানরা
প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিন খাওয়াকে অধিক পরিমাণে গুরুত্ব দিয়েছেন।কেননা প্রোটিন
আমাদের হার্ট কে নিরাপদ রাখে, উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ কর, কোষের গঠন কর,
চুল ও ত্বকে সুন্দর রাখে। ক্যালরি চিনি এবং লবণের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে
আমাদের অবশ্যই খাবারে প্রোটিন রাখতে হবে
প্রোটিন সেলুলার ফাংশনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে আপনাকে সুস্থ রাখে।
কোষের স্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং আপনার শরীরের সর্বাধিক সুস্থতার জন্য উচ্চ
প্রোটিন যুক্ত খাবার অনেক প্রয়োজনীয়।প্রোটিনে রয়েছে অ্যামিনো এসিড।যা লম্বা
চেইনে সাজানো থাকে।কোষের গঠন ও সেলুলার ফাংশনের জন্য আমাদের অবশ্যই পরিমণমত
প্রোটিন খেতে হবে।
ডায়েটে কোন ধরনের প্রোটিন খাওয়া উচিত
ডায়েটে কোন ধরনের প্রোটিন খাওয়া উচিত?মানব দেহের সম্পূর্ণ কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই সারা জীবন প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।এবং মানব দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এই প্রোটিন আপনি নানা ধরণের খাবার থেকে পাবেন।এই সকল খাবার আপনি আমাদের আশে পাশেই সহজে পাবেন।কিন্তু এই প্রটিন যুক্ত খাবারের দামটা একটু বেশি।সকলের জন্য এই খবার প্রতিদিন ডায়েটে বা মেনুতে রাখা সম্ভব না।
আপনার ডায়েটে মানসম্মত প্রোটিন যুক্ত খাবারের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য আপনাকে কিছু প্রধান প্রধান খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে।যেমনঃমাছ,মাংস,দুগ্ধজাত খাবার,ডিম,বাদাম,ভূট্টা,গম ইত্যাদি।এসব খাবার আপনার প্রোটিনের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আপনার প্রোটিনের চাহিদা কতটুকু কীভাবে বুঝবেন
আপনার প্রোটিনের চাহিদা কতটুকু কীভাবে বুঝবেন? ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা সম্পর্কে আপনি মোটামোটি জানতে পারলেও আপানার শরীরে প্রোটিনের চাহিদা কতটুকু তা বুঝতে আপনার নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে?আসুন আমরা এখন এর পরিমাণ সম্পর্কে একটু জেনে নিই।
আসলে প্রোটিন কার শরীরে কতখানি লাগবে তা সেই ব্যক্তির ওজন,বয়স,উচ্চতা ও নারী,পুরুষ ভেদে নির্ভর করে।সবার জন্য প্রোটিনের চাহিদা এক নয়।ডায়েটে কার খাদ্য তালিকায় কতটুকু প্রোটিন দরকার তা একজন স্বাস্থ্যবিদ সব থেকে ভাল বলতে পারবেন।আবার কার শারীরিক সমস্যা কেমন তার উপরও নির্ভর করে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রতি কেজি ওজনের জন্য .৮৩ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন।অর্থাৎ আপনার ওজন যদি ৬০ থেকে ৭০ কেজি হয় তাহলে আপনার প্রতিদিন ৬০ গ্রাম এর মত প্রোটিন প্রয়োজন।সেই জন্য আপনাকে প্রতিদিন মুরগির বুকের মাংস খেতে হবে।এবং দেশি মুরগির থেকে ব্রয়লার মুরগির বুকের মাংস থেকেই এই পরিমাণের প্রোটিন পাওয়া যাবে।
অথবা মুরগির পরিমাণ কম হলে সেখানে ছেলে হলে ৪ টা ডিম এবং মেয়ে হলে দুইটা ডিম খেতে হবে।তবে নারী পুরুষ ভেদে,বয়স ভেদে শারীরিক গঠন ও পরীশ্রম অনুযায়ী এটি কম বেশি হয়ে থাকে।সেই জন্য আপনাকে অবশ্যই একজন ভা ডায়েটিশিয়নের পরামর্শ নিতে হবে।
ডায়েটে প্রোটিনের হজম শক্তি কতটুকু
ডায়েটে প্রোটিনের হজম শক্তি কতটুকু? মানবদেহের ভেতর হজম শক্তি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। হজম শক্তি না থাকলে মানুষ পেটের মধ্যে নানা সমস্যায়
ভুগতে পারে। হজম শক্তি মানুষকে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে সাহায্য করে। হজম শক্তি
তার যত বেশি তার ক্যালরি ক্ষয়ের সম্ভাবনা বেশি। হজম প্রক্রিয়ার কারণেই
আমরা আমাদের শরীরে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকে।
আমাদের শরীরে থাকা গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের মাধ্যমে শরীরে থাকা প্রোটিনসহ বিভিন্ন উপাদান একক অ্যামিনো এসিডে পচে যায়। হজম প্রক্রিয়া আমাদের শরীরে পাকস্থলীতে শুরু হয়। এটি পাকস্থলীতে থাকা পেপসিনোজেন হাইড্রোক্লোরিক এসিডের কাজের মাধ্যমে পেপসিনে রূপান্তরিত হয়ে ছোট অন্ত্রে কাইমেট্রোপসিন ও ট্রিপসিনের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা বজায় থাকে। এভাবে প্রোটিন আমাদের শরীরে হজম শক্তিকে বজায় রাখে।
ডায়েটে প্রোটিনের অসুবিধা
ডায়েটে প্রোটিনের অসুবিধা রয়াছে। ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতার পাশাপাশি উচ্চ প্রোটিন গ্রহণের ফলে এর নানা অসুবিধা আছে। যা আমাদের জীবনকে অনেক সময় হুমকির দিকেও ফেলে দেয়। উচ্চমাত্রার প্রোটিন গ্রহণ আমাদেরকে সুস্থতার পাশাপাশি অনেক সময় অসুস্থ করে দেয়।তাই প্রোটিন গ্রহণের সময় আমাদের অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে।এবং সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
১.কিডনি স্ট্রোকঃআপনার শরীরে যদি আগে থেকে কিডনি জনিত কোন সমস্যা থেকে থাকে,তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রোটিন খাওয়া উচিত। কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় উচ্চ প্রোটিন গ্রহণের ফলে কিডনি জনিত নানা সমস্যা দেখা দেয়। ফলে আপনি কিডনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।
২. অন্যান্য পুষ্টির অনুপস্থিতিঃডায়েটে অত্যাধিক পরিমাণে প্রোটিনকে
গুরুত্ব দেয়ার ফলে,অধিকাংশ মানুষের প্রোটিনের উপরে বেশি ঝুকে পড়ে। ফলে
অন্যান্য পুষ্টি যেমনঃ ফাইবার,ভিটামিন,পটাশিয়াম, খনিজ ইত্যাদি গ্রহণের
প্রতি অজান্তেই উদাসীন হয়ে পড়ে। ফলে প্রোটিনের বাইরে মানব দেহে শরীরে অন্যান্য
পুষ্টির ঘাটতি দেখা যায়।
৩.পানি শূন্যতা দেখা দেয়ঃ প্রোটিন আমাদের শরীরে মেটাবলিজমকে বৃদ্ধি করে।আর মেটাবলিজমের জন্য বেশি বেশি পরিমাণে পানি প্রয়োজন। তাই প্রোটিন আমাদের শরীর থেকে বেশি পরিমাণে পানি শুষে নিয়ে ডিহাইড্রেশানের সৃষ্টি করতে পারে।
৪.PKU রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাঃ যেসব মানুষের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতা এবং বিপাকীয় জটিলতার সমস্যা রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই উচ্চমাত্রার প্রোটিন গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। ফেনাইলকেটোনুরিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার এবং পানি এড়িয়ে চলতে হবে।
৫.এলার্জি জনিত সমস্যাঃ অনেক সময় মানবদেহে প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দেয়। গরুর দুধ,ডিম, বাদাম, পনির ইত্যাদি প্রোটিন যুক্ত খাবারে এলার্জি দেখা যায়। ফলে বমি,ডায়রিয়া,চুলকানি,গায়ে গোটা,জিহ্ববা ফুলে যাওয়া,চোখে চুলকানি ও ফুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। এগুলো সবই এলার্জির কারণে হয়ে থাকে।
প্রোটিনের ঘাটতি জনিত সমস্যা ও অপুষ্টি
প্রোটিনের ঘাটতি জনিত সমস্যা ও অপুষ্টি থাকলে আপনি নানা সমস্যায় ভুগবেন।। শরীরে
প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা অনেক বেশি। প্রোটিন যেমন মানুষের শরীরে
কোষের উন্নতি ঘটায় তেমন বিভিন্ন অপুষ্টি ও রোগ থেকে দূরে রাখে। প্রোটিনের অভাবে
মানসিক অক্ষমতা এবং কোয়াশিওরকর রোগ দেখা দেয়। কোয়াশিওরকর রোগের লক্ষণ গুলি
ডায়রিয়া,বৃদ্ধির ঘাটতি,চর্বিযুক্ত ত্বক,ফ্যাটি লিভার ইত্যাদি।
প্রোটিনের অভাবে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়।ব্রেনের স্বাভাবিক গঠনে বাধাপ্রাপ্ত হয়।মানসিক ও শারীরিক ভাবে দূর্বল হয়।নানা ধরণের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।এমনকি মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়।অপুষ্টিতে ভোগার ফলে ত্বক ও চুলের সমস্যাও দেখা দেয়।এসব সমস্যা আমরা কেউই চাই না।তাই এসব সমস্যা থেকে রক্ষার জন্য আমাদের অবশ্যই নিয়মিত প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।
শেষকথাঃডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা এবং পরিমাপ সম্পর্কে
ডায়েটে প্রোটিনের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা অনেক বেশি।প্রোটিন পাশী গঠন করে যেমন ওজন কমাতে সাহায্য করে তেমন রোগ থেকেও দূরে রাখে।চুল ও ত্বক সুন্দর রাখার পাশাপাশি আমাদের বয়সকে ধরে রাখে।আমি নিজেও দীর্ঘদিন ধরে সকালের খবারে প্রোটিন গ্রহণ করি।সুন্দর ও সুস্থ্য শরীরের জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।
ডায়েটে প্রোটিনের উপস্থিতি আপনার জীবন কে রাখবে রোগমুক্ত ও অপুষ্টিমুক্ত।হাড় ও উত্তম পেশী আপনাকে দিবে একটি শক্তিশালী ও সুঠাম দেহ।আর সুন্দর স্বাথ্য মানেই সুন্দর একটি জীবন।আপনি নিজেও ভাল থাকবেন এবং অন্যকেউ ভাল রাখবেন।অবশ্যই চেষ্টা করুন সঠিক পরিমাপে প্রোটিন গ্রহণের।এটি আপনাকে একটা বয়সের পর ঔষধের খরচ ও শারীরিক অসুস্থতা থেকে দূরে রাখবে।
রওশন ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url