অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন এবং পার্শ্বপ্রতিক্রীয়া

অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন নিয়ে আজকের আর্টিকেল। আভোকাডো হলো পুষ্টিতে ভরপুর একটি ফল যা আধুনিক ডায়েটের সকল ধরনের পুষ্টির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই এর গুনাগুন এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো জানা আমাদের জন্য জরুরী।
অ্যাভোকাডো-কী-ও-এর-গুনাগুন
অ্যাভোকাডো একটি বিদেশী ফল যা বর্তমানে বাংলাদেশে চাষ করা হচ্ছে। অ্যাভোকাডো সবজি নাকি ফল তা নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে।আজকে অ্যাভোকাডো সম্পর্কে ও এর গুনাগুন গুলো আমাদের শরীরে কেমন পরিবর্তন নিয়ে আসে সেটিই বিস্তারিত জানব।

সূচিপত্রঃ অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন 

অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন 

অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন? অ্যাভোকাডোর অপর নাম হলো মাখনফল।এটি পুষ্টিতে ভরপুর একটি ফল যা আধুনিক ডায়েটের সকল ধরনের পুষ্টির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। এই ফলের গুরুত্ব অনেক।এটি মূলত একটি ফল। অ্যাভোকাডো ফল নাশপাতি ফল হিসেবেও পরিচিত।এর খোসা কুমিরের মত অমসৃণ হওয়ায় এই ফলকে কুমির নাশপাতি ফলও বলা হয়।এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। একটি অ্যাভোকাডো ফলে একটি মিডিয়াম কলা থেকেও বেশি পটাশিয়াম থাকে। অ্যাভোকাডো ফলকে ফেসিয়াল মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে কারণে তে প্রচুর পরিমাণে ত্বককে হাইড্রেটিং করার তেল।

অ্যাভোকাডো ফলের বৈজ্ঞানিক নাম হলো persea americana. এটি মূলত মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার স্থানীয় উদ্ভিদ। অ্যাভোকাডো লরেসি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। বিদেশে এই ফলের চাষ ও চাহিদা অনেক বেশি। এর কারণ মূলত এটির পুষ্টিগুণ। এই আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন আসলে এ খাবার উপকারিতা কতটুকু। যে খাবারের যত গুণই থাকুক না কেন অবশ্যই তা জেনে বুঝে খাওয়া উচিত। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

অ্যাভোকাডো ফলের পুষ্টিমান

অ্যাভোকাডো ফলের পুষ্টিমান অনেক বেশি। এর পুষ্টিমানের জন্যই এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক। এটি স্বাদের দিক থেকেও অনেক ভালো। আমরা যেকোনো কিছু শুধু স্বাদের জন্য খায় না, পুষ্টিমানের কথা বিবেচনা করেও খাই। কারণ আমরা যে ফল খাই তা থেকে আমরা নানা ধরনের গুণাবলী আমাদের শরীরে পৌঁছে দিয়ে থাকি। এবং এসব গুণাবলী আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।অ্যাভোকাডোর প্রতি ১০০ গ্রামের পুষ্টিমান হলো।

  • শক্তি ৬৭০ কিজু
  • শর্করা ৮.৫৩গ্রাম
  • চিনি ০.৬৬ গ্রাম
  • খাদ্য আঁশ ৬.৭ গ্রাম
  • স্নেহ পদার্থ ১৪.৬৬ গ্রাম
  • সুসিক্ত স্নেহ পদার্থ ২.১৩ গ্রাম
  • প্রোটিন ২ গ্রাম

এছাড়াও অ্যাভোকাডো ফলে রয়েছে থায়ামিন ব১, রিবোফ্লাভিন বি২, নায়াসিন বি৩, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, লৌহ ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়া্ম, সোডিয়াম, জিংক, পানি , খনিজ ও ম্যাঙ্গানিজ। যা আমাদের শরীর চুল ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আমাদের অবশ্যই খাবারে অ্যাভোকাডো রাখা উচিত। এই উপাদানগুলি থাকার জন্য অ্যাভোকাডো ফলটিকে অনেক বেশি অনন্য করে তুলেছে।

অ্যাভোকাডো ফলের খাদ্যগুন

অ্যাভোকাডো ফলের খাদ্যগুন অনেক বেশি। অ্যাভোকাডো ফলটির খাদ্যগুন লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাই যে,Avocado ফলের ক্যালরির ৮০%আসে চর্বি থেকে।বাইরে থেকে অ্যাভোকাডো ফল চর্বিযুক্ত মনে হলেও এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক ভাল।অ্যাভোকাডো ফলের চর্বি তিন ধরনের।ফাইটোস্টেরল (প্রদাহ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে), পলিহাইড্রওক্সিল্যাটেড ফ্যাটি আলকোহল (PFA), (Avocado ফলের এই উপাদিনটি যথেষ্ট পরিমানে ফলটিকে অন্যতম করেছে)অলেইক এসিড (Avocado ফলের এই গুনটি ওজন,হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুকি কমাতে সহায়তা করে)।

অ্যাভোকাডো ফলে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড যা দেহ থেকে খারাপ কোলেস্টেরল কমায় ও ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়।এছাড়াও অ্যাভোকাডো ফলে থাকা প্যান্টোথেনিক এসিড,ডাইটারি ফাইবার,তামা,ফলিক এসিড,ভিটামিন বি৬,ভিটামিন কে ও ভিটামিন সি এর জন্য খুব ভাল উৎস। এ সকল খাদ্যগুণ পাবার জন্য আমরা অ্যাভোকাডোকে একদম আদর্শ উৎস হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। হৃদরোগের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে এবং ভালো চর্বির উৎকৃষ্ট উৎস হিসেবে সমাদৃত হওয়ার আগে অ্যাভোকাডোকে একটি ব্যয়বহুল ফল ছাড়া আর কিছুই নয় এই বলে উপহাস করা হতো।

অনেকেই এই ফলকে নিয়ে অনেক কথাই বলে থাকেন। অনেকের কাছে এই ফল অলৌকিক খাবার হিসেবে পরিচিত। আমার অনেকেই বলে থাকেন যে এই ফলে বেশি ক্যালরি রয়েছে। এটি সঠিক যে অন্যান্য সবজির তুলনায় এই ফলে ক্যালরির পরিমাণ বেশি। তবে স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎসের জন্য এই ফল নিশ্চিন্তে খাওয়া যেতে পারে। এবং এই ফল আপনি আপনার প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী ডায়েটের অংশ হিসেবে যোগ করতে পারেন।এবং এই ফলের খাদ্যগুণ সঠিকভাবে পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি সঠিকফল বাছাই করে কিনতে হবে বা খেতে হবে। 

কেনার সময় অবশ্যই এই ফলের উপরের অংশটি যেন গারো সবুজ অথবা একটু কালচার সবুজ রঙের হয়। এবং চাপ দিলে একটু বসে যায়। এই ধরনের ফল খাওয়ার জন্য একদম উপযুক্ত এবং এর খাদ্যগুণ বজায় থাকে। যে ফলের উপরের অংশ সবুজ রং ও শক্ত হয়ে থাকে সেগুলি কাচা এবং খাওয়ার জন্য অনুপযুক্ত। এটি কিনে আনার পর কিছুদিন ঘরে রেখে খেতে হবে। যেই ফলের উপরে অংশ বেশি নরম, কুচকে যাওয়া এবং দাগ আছে এ ধরনের ফল কেনা থেকে এড়িয়ে যেতে হবে। কারণ এগুলোর স্বাদ ও গুণাগুণ ভাল হয় না।

অ্যাভোকাডো ফলের প্রকারভেদ

অ্যাভোকাডো ফলের প্রকারভেদ রয়েছে। উদ্ভিদবিদরা Avocado কে ৩টি দলে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন।সেগুলো হলো গুয়েতনাম,মেক্সিকান এবং পশ্চিম ভারতীয়।তিনটি জাতিই ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডা দুই ক্ষেত্রেয় হয়।এটি মূলত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান টাইপ যা ফ্লোরিডায় বাণিজ্যিক প্রভাব বাড়িয়ে রেখেছে।Avocado ফল কে যেই শ্রেণিতে ভাগ করা হোক না কেন এর পুষ্টিগুন ব্যাপক।

এবং অত্যন্ত উপকারী একটি ফল।যা আপনি ভালভাবে বিচার বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারবেন। মূলত অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। একটি সম্পূর্ণ অ্যাভোকাডো ফলে ২৪০ ক্যালোরি থাকে। ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ গ্রাম প্রোটিন, ২২ গ্রাম ফ্যাট এবং ১১ গ্রাম সোডিয়াম থাকে। এতে কোন কোলেস্টেরল নেই।

অ্যাভোকাডো ফলের স্বাথ্য উপকারিতা

অ্যাভোকাডো ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা অত্যন্ত বেশি। এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতার দিকগুলো চিন্তা করলে আমাদের প্রত্যেককে এই ফল নিয়মিত খাওয়া উচিত। তবেই আমরা এর স্বাস্থ্য উপকারগুলো পেতে পারব। আমাদের উচিত এই ফলের স্বাস্থ্যগত গুনাগুনের জন্য গুরুত্ব সহকারে খাওয়া। এটি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করে।

হার্ট আটাকের ঝুকি কমায়ঃ রক্তচাপ কমাতে,ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে ও ধমনীর বিকাশ ঘটাতে অ্যাভোকাডো অনেক ভূমিকা পালন করে।স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতে Avocado ফলের তুলনা হয় না।এছাড়াও আস্বাভাবিক হার্ট স্পন্দনও হার্ট আটাকের সম্ভাবনা কমায়।Avocado ফলের এসব গুনের কোনো তুনা নেই।প্রতিদিন যদি আমি,আপনি একটি করে অ্যাভোকাডো ফল খাই তাহলে আচমকা মৃত্যুর হার অনেক কমে যায়।

চোখের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখেঃ অ্যাভোকাডোতে থাকা ২টি ক্যারোটিনয়েড চোখের টিস্যুতে জমা হয় ও মাকুলার পিগমেন্ট তৈরী করে।সেই ২টি ক্যারোটিনয়েড হলো লুটেন ও জেক্সানথিন।Avocado ফলের গুনাগুনের জন্য ক্ষতিকারক নীল আলোকে ফিল্টার করে ও ফ্রী র‍্যাডিকেল থেকে চোখকে রক্ষা করে ও এন্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করেঅক্সিডেটিভ ক্ষতি কমায়,লুটেইন ও জেক্সানথিন বয়স -সম্পর্কিত ম্যাকুলার রোধ করে ও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া থেকে বিরত রাখে।

অ্যাভোকাডোতে ভিটামিন ই ও মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটও রয়েছে।যা অন্য খাবার থেকে বিটা ক্যারোটিন লুটিনের মত প্রতিরোধমূলক ক্যারোটিনয়েডের শোষণ বাড়ায়।বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ তে পরিবর্তিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।Avocado ফলে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড চোখের জ্বালা পোড়া কমিয়ে চোখকে শুষ্ক হওয়া থেকে রোধ করে এবং চোখের স্বাভাবিকদৃষ্টিশক্তি বজায় থাকে।

অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধঃ এটিতে বিদ্যমান ভিটামিন কে এর একটি পূর্ণ উৎস।যা আমরা অর্ধেক ফল থেকেই পেয়ে থাকি।হাড়ের জন্য Avocado তে থাকা ভিটামিন কে ভূমিকা পালন করে থাকে।এতে থাকা প্রোটিন হাড়ের টিস্যুতে ক্যালসিয়াম কে ধরে রাখে ও হাড়কে মজবুত করে।এই ফলে বিদ্যমান ভিটামিন কে অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে।যা বের না হয়ে হাড়ের কাজে ব্যবহৃত হয়।Avocado ফল গ্রহণের ফলে এতে থাকা ভিটামিন কে হাড়ের খনিজ ঘনত্ব বৃদ্ধি ও ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমায়।

হজমে সহায়তা করেঃ একটি অ্যাভোকাডো তে ১০ গ্রামের মত ফাইবার থাকে।যা খাবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের মত রোগ থেকে বিরত রাখে।তা আপানার উচিত প্রতিদিনের খাবারে এই ফল কে রাখা।Avocado ফলে থাকা ফাইবার খাবার হজম শক্তি বাড়ায়।আপনার হজম শক্তিতে যদি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গ্যাসের সমস্যায় ভুগবেন।তাই আপনার উচিত এই সমস্যা এড়িয়ে যাবার জন্য খাবারে মেনুতে Avocado রাখা।এটি আপনাকে হজম শক্তি বাড়ানোর সাথে সাথে এর সাথে জড়িত আরও সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে।

রোগ প্রতিরোধ করেঃ অ্যাভোকাডো তে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি রয়েছে । ভিটামিন বি শরীরকে রোগ জীবানু থেকে রক্ষা করে। Avocado তে থাকা ভিটামিন ই,উদ্ভিজ্জ খনিজ ও ভিটামিন সি থাকায় ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতেকে বাড়িয়ে তোলে।ফাইবার কোলনে কার্সিনোজেনের উপস্থিতি সময়কে কমিয়ে দিয়ে প্রতিদিন মলত্যাগে সাহায্য করে।কিছু ধরণের ফাইবার অন্ত্রের প্রদাহ এবং কোষের বিস্তার কমায়।যা ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।

রিসার্চ থেকে পাওয়া গেছে ফোলেট গ্রহণের সাথে কোলন, পাকস্থলী, অগ্নাশয় এবং সার্জিক্যাল ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। যদিও এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা প্রশ্নের সম্মুখীন থেকে যায়। একটি অ্যাভোকাডো ফলের অর্ধেকের মধ্যে ফোলেটের উৎস থাকে একাশি এমসিজি। যা প্রায় ২০ ভাগ। এই ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কারণ এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ফাইটোকেমিক্যাল।

২০২৩ সালের এক বিশ্বস্ত রিসার্চ থেকে জানা গেছে যে, সপ্তাহে একটি এই ফল পরিবেশন এর ফলে কোলেরেক্টাল, ফুসফুস এবং মুত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। যদি এগুলো কোনটাই নিশ্চিত করে বলা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন আরও বেশি গবেষণা। এর ভালো গবেষণা প্রমাণ করবে যে, এই ধরনের ক্যান্সারের জন্য অ্যাভোকাডো আসলে কতটা কার্যকর।

ঘুম ভাল হয়ঃ অ্যাভোকাডো তে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম শরীরের ক্লান্তি দূর করে ও ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে। আর প্রতিদিনের ভালো খুব আমাদের শরীরের জন্য কতটা জরুরি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ভালো ঘুম আমাদের শরীর ও মন দুটোকে সতেজ রাখে এ কথাটি আমরা সকলেই জানি।। সুতরাং ভালো ঘুমের জন্য আমাদের অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে সপ্তাহে ন্যূনতম একদিন এই ফলটি খাওয়ার।

ওজন কমায়ঃ ওজন কমানোর উপযোগী খাবার হিসেবে অ্যাভোকাডো অন্যতম।গবেষণায় দেখা গেছে যে,খাবারে সাথে অ্যাভোকাডো খেলে ২৩% তৃপ্তি পাওয়া যায়।যারা Avocado খান না তাদের তুলনায় যারা খান তাদের ২৮% খাবার ইচ্ছা কম হয়।কারণ Avocado কম ক্যালরি যুক্ত খাবার হবার ফলে বেশি খেয়ে পেট ভরানো যায়।ফলে স্বাভাবিক ভাবেই খাবার চাহিদা কমে যায়।তাই ডায়েট চার্টে অ্যাভোকাডো যোগ করলে আপনাকে কম ক্যালরি খেতে সাহায্য করবে।আপাকে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভাসে সাহায্য করবে।

চুল ও ত্বকের যত্নঃ আমরা প্রত্যেকেই আমাদের নিজেদের ত্বক চুলকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আমরা আমাদের অনেক বয়স পর্যন্ত ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চাই। প্রতিটি চুল ও ত্বকের যত্নের প্রসাধনীতে ভিটামিন বি৫ থাকে। অ্যাভোকাডোতে এটির ৪৫% আছে।যা ত্বক ও চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে ও লাবণ্য ধরে রাখে।

ভ্রুণের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিঃ ভ্রূণের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি সুস্থ গর্ভাবস্থার একটি মূল্যবান অংশ। ভ্রুণের স্বাত্থ্য বৃদ্ধির জন্য ফোলেট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় গর্ভপাত এবং নিউরাল টিউবের অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি থাকে। এটি সেবনের ফলে ঝুঁকি কমে যায়। একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট গ্রহণ করা উচিত। একটি অ্যাভোকাডোতে ১৬০ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট রয়েছে। যা ভ্রুণের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

বিষন্নতা কমায়ঃ অ্যাভোকাডো হলো ফোলেটের অনেক ভালো একটি উৎস। মোটকথা খাদ্য তালিকায় এটি অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় জানা গেছে যে ফোলেট এবং বিষন্নতার মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে। ফোলেট হোমোসেস্টাইন গঠন প্রতিরোধ করে। এটি মূলত একটি পদার্থ যা শরীরে পুষ্টি গ্রহণ এবং মস্তিষ্ক সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। মেজাজ,ঘুম এবং খুদা নিয়ন্ত্রণে কর্মহীনতা, বিষন্নতা ও সেরোটোনিন এবং ডোপামিনের উৎপাদনের সাথে অতিরিক্ত হোমোসেস্টাইনকে যুক্ত করে থাকে। তাই আমাদের এই ফল খাওয়া উচিত।

প্রাকৃতিকভাবে ডিটক্সিফিকেশন করেঃ ডিটক্সিফিকেশন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী। আমাদের শরীরে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা পিত্ত ও মল ত্যাগের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। অ্যাভোকাডোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা পিত্ত ও মলত্যাগের মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থ নির্গমনের সাহায্য করে। এছাড়াও অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা মাইক্রোবিয়াল বিচিত্র রক্ষা করে। আমাদের শরীরেঅনেক ভালো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এগুলো বজায় রাখতে এই ফলের ভূমিকা অনেক।

এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিক্রীয়াঃ অ্যাভোকাডো এবং অ্যাভোকাডো তেলে রয়েছে এন্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। গবেষণায় দেখা গেছে যে অ্যাভোকাডো বীজের নির্যাসে রয়েছে স্ট্রেপ্টোকক্কাস অ্যাগালাক্টিয়া এবং স্টাফিলোকক্কাস সংক্রমণ। এই ফল উভয়ের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে শরীরকে হেফাজত করেঃ অ্যাভোকাডো ফলে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। যা কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এতে থাকা ফাইবার উচ্চ রক্তচাপ, ইনসুলিন বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি, কোলেস্টেরল ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং প্রয়োজনীয়। সুতরাং এই ফলের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।

ডায়েটে অ্যাভোকাডো কীভাবে যুক্ত করবেন

অ্যাভোকাডোর উপকারীতা গুলো পড়ে আমরা এর স্বাথ্য উপকারিতা গুলো বুঝতে পেরেছি।Avocado ফলটিকে আপনার খাবারে যোগ করার জন্য সহজ ও সুন্দর কয়েকটি রেসিপি রয়েছে। যে রেসিপিগুলো আপনি ব্যবহার করে অনেক উপকার পাবেন। এবং এই ফলের স্বাদও দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। আমাদের প্রত্যেকেরই নিম্নলিখিত উপায়ে এটি বানিয়ে খাওয়া উচিত। তাহলে আমরা এর পুষ্টিগুণ রক্ষা করে খেতে পারব।

  1. টোস্ট বা ক্র্যাকারে অ্যাভোকাডো মাখিয়ে খাওয়াঃ আপনি আপনার পছন্দ মত মশলা দিয়ে বা সাধারণ ভাবেও আভোকাডো ম্যাশ করে এটিকে টোস্ট বা ক্র্যাকারে জেলির মত করে মাখিয়ে সকালের স্বাথ্যকর নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।
  2. গুয়াকামোলঃ এটি একটি মেক্সিকান  মজাদার রেসিপি।পেয়াজ,ট্মেটো,রসুন,লবণ,মরিচ বা গোলমরিচ,ধনেপাতা।সামান্য লেবুর রস দিয়ে Avocado ম্যাশ করে এই জনপ্রিয় মজাদার খাবার টি তৈরী করতে পারেন।
  3. অ্যাভোকাডো সালাদঃ পুষ্টিকর ও সতেজ এই সালাদ টি আপনার ডায়েটের খাবার হিসেবে খুবই মজাদার।বালসামিক ভিনেগার লবণ, লেবুর রস,সামান্য অলিভ ওয়েল,গোলমরিচ দিয়ে মাখিয়ে দ্রুত তৈরী করে ফেলতে পারেন এই মজাদার সালাদটি।
  4. Avocado স্লাইসঃ আপনি চাইলে আরও সাধারণ ভাবে শুধুমাত্র স্লাইস করে সেদ্ধ ডিমের সাথে খেতে পারেন। অথবা স্যান্ডউইচে দিয়ে খেতে পারেন। বা বিভিন্ন রোলে অথবা রুটি পাউরুটির সাথে রোল করে খাওয়া যেতে পারে। অথবা এটি ভালো ভাবে নরম করে গোলমরিচ সামান্য লবণ দিয়ে দিয়ে বানিয়ে করে রুটির সাথে খেতে পারেন না।
  5. Avocado সসঃ ফলের অন্যতম আরেকটি মজাদার স্বাস্থ্য সম্মত খাবার হলো অ্যাভোকাডো সস।এটি অত্যন্ত ক্রীমি এবং সবজী,টমেটো ও কর্ণ দিয়ে তৈরী করা হয়ে থাকে। এটি আপনি অল্প পরিমানে পাস্তায় মিশিয়ে খাতে পারেন। এই সস রুটি ও পাউরুটির সাথেও খেতে অনেক মজা।
  6. Avocado আচারঃ অ্যাভোকাডো কে আপনি কেটে শুধুমাত্র ২৪০ গ্রাম ভিনেগারের সাথে ২৪০ গ্রাম পানি মিশিয়ে তাতে ১ টেবিল স্পুন লবণ দিতে হবে।এবং চুলায় দিয়ে ফুটাতে হবে।তারপর তাতে ৩টি অ্যাভোকাডো টুকরা করে মিশিয়ে সারাদিন রেখে দিতে হবে।যা আপনি সকালের নাস্তায় রুটি বা ব্রাউন পাউরুটির সাথে পরিমাণমত খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  7. Avocado স্ক্র্যাম্বল এগঃ সামান্য ওলিভ ওয়েলের সাথে ডিম দিয়ে ভালভাবে নেড়ে অর্ধেক হলে তাতে Avocado স্লাইস দিয়ে গরম না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকব।খেয়াল রাখতে হবে যেন পুড়ে না যায়।এভাবেই তৈরী করে ফেলউন স্বাথ্যকর Avocado স্ক্র্যাম্বল এগ।
  8. মেয়োনিজের বিকল্প হিসেবেঃ Avocado মেয়োনিজ খুবই স্বাথ্যকর।আমরা সাধারণত যে মেয়োনিজ খাই তা অতিরিক্ত তেল দিয়ে বানানো হয়ে থাকে।এবং এটি ওজন বাড়ায় ও রক্তচাপ বৃদ্ধি করে।অপরদিকে অ্যাভোকাডো মেয়োনিজ অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাথ্যকর।এটি চিজ,ম্যাশ করা মিষ্টি আলু,সামান্য ওলিভ ওয়েল,লেবুর রস,সামান্য লবণ,খুবই কম গোলমরিচপানি দিয়ে তৈরী করা হয় অ্যাভোকাডো স্বাথ্যকর মেয়োনিজ।

অ্যাভোকাডো কি ও এর গুনাগুন জানার পরে এদিকে বিভিন্ন সবজি বা ফল যেমন কলা, আনারস বা বেরির সাথে খেতে পারেন। অথবা যারা জীমে যান তারা এটিকে প্রোটিন প্যাকড পানিওর সাথে রুটিন পাউডার, গ্রিক দই বা দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি নির্দিষ্ট কোন টাইম নেই। রাতে খেলে এতে থাকা পটাশিয়াম এর জন্য আপনার ঘুম ভালো হবে। এটি আপনার শরীরের রক্ত প্রবাহকে বৃদ্ধি করে এবং শর্করার পরিমাণ কম থাকে। তাই এটি খেলে ঘুম ভালো হয়। এটা সকালে খালি পেটে না খাওয়াই উত্তম। কারণ এতে রয়েছে চর্বি। এটি কে যদি আপনি দুপুরের খাবার হিসেবে গ্রহণ করেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার ক্ষুধা হ্রাস পাবে এবং আপনি কম ক্যালোরি গ্রহণ করবেন। ফলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

অ্যাভোকাডো-কী-ও-এর-গুনাগুন

গর্ভাবস্থায় অ্যাভোকাডো ফল কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ

গর্ভাবস্থায় Avocado ফল নারীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।এই সময় অনেক নারীই মনিং সিকনেসে ভোগে।ফলে ক্লান্তিবোধ করেন।তাই দুপুরের খাবারের পর অ্যাভোকাডো ফল রাখা উচিত খাবারের মেনুতে।এছাড়াও এই সময় বেশি ক্যালরির খাবার খাওয়া উচিত।বিশেষজ্ঞরা বলছেন,স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে এই সময় অতিরিক্ত আরও ৩০০ ক্যালরির খাবার প্রয়োজন।

এছাড়াও ভ্রুনের বিকাশে অ্যাভোকাডোর ভূমিকা অপরিসীম।কারণ এই সময় নারীর ফলিক এসিডের প্রয়োজন অনেক বেশি থাকে যা অ্যাভোকাডো  থেকে পাওয়া যায়।গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়ামের দরকার হয়।যা Avocado থেকে পাওয়া যায়।প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর সাথে সাথে অ্যাভোকাডো বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজের অভাব পূরনে অনেক ভূমিকা রাখে।

গর্ভাবস্থায়  অ্যাভোকাডোর মত মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারের উচ্চতর গ্রহণ ঘুমের মান উন্নত করে।গর্ভকালীন সময়ের অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে।যদি শারিরীক কোনো সমস্যা থাকে বা এলার্জি জনিত অসুখ তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এই ফল খাওয়া উচিত। তাই গর্ভবতী মা ও শিশুর এ সকল গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলিকে লক্ষ্য রেখে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় আভোকাডো খাওয়া উচিত।

চুলের যত্নে অ্যাভোকাডো তেল

চুলের যত্নে অ্যাভোকাডো তেল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাভোকাডো তেল অনেক উপকারী।বিশেষ করে গর্ভবতী নারীর জন্য।Avocado তেল একটি ক্যারিয়ার তেল।যা এই সময় আপনার ত্বক এবং পেটে নিরাপদে ব্যাবহার করা যেতে পারে।স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে সাহায্য করে অ্যাভোকাডো তেল।কারণ Avocado তেলে রয়েছে ওমেগা ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন ই,ভিটামিন সি, ফাইটোস্টেরল।এই যৌগগুলি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে কোষগুলিকে পুষ্ট করে ।

নতুন কোষ তৈরীতে সাহায্য করে এবং খাবারে অল্প পরিমাণে এই তেল খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।আপনি যদি গর্ভবতী হন তবে দয়া করে নিশ্চিত করুন ১০০% খাঁটি কিনা।এবং তেলটি অবশ্যই উচ্চ মানের হতে হবে।কোনোও কীটনাশক বা কেমিক্যাল যেন না থাকে।তা না হলে ত্বকে জ্বালা পোড়া হতে পারে বা শিশুর ক্ষতি করতে পারে।তাই অবশ্যই আপনি ব্যাবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

অ্যাভোকাডো ফলের পার্শ্বপ্রতিক্রীয়া

অ্যাভোকাডো ফলের পার্শ্বপ্রতিক্রীয়া রয়েছে।এই ফল পুষ্টিকর বলে আমরা চাইলেই  অনেক বেশি খেতে পারি না।যদিও অ্যাভোকাডো নিরাপদ ।তবে প্রয়োজনের বেশি খেলে আমরা  সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি।অ্যাভোকাডো খাবার সময় আমাদের কিছু জিনিস খেয়াল রেখে খাওয়া উচিত। এবং বিশেষ কোন সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায় যে এর পার্শ্ব প্রতিক্রীয়া হিসেবে নিচের সমস্যা গুলি হতে পারে।

গ্যাসের অতিরিক্ত সমস্যা থাকলে আমাদের এই ফল খাওয়া উচিত নয়। এলার্জিজনিত সমস্যা যাদের  আছে তাদের Avocado এড়িয়ে চলতে হবে। অ্যাভোকাডো তে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট ও চর্বি থাকায় অতিরিক্ত খেলে মোটা হবার সম্ভাবনা থাকে। মাইগ্রেনের সমস্যা যাদের আছে তারা এটি সব সময় খেতে পারবে না।কারণ Avocado তে থাকা টাইরামিন মাইগ্রেন বাড়ায়।

অ্যাভোকাডো-কী-ও-এর-গুনাগুন

বাংলাদেশে অ্যাভোকাডো কোথায় পাওয়া যায় ও দাম কেমন

বাংলাদেশে অ্যাভোকাডো কোথায় পাওয়া যায়? বাংলাদেশে চাঁপাই নবাবগঞ্জ,বগুড়া,রাজশাহী,এবং খাগড়াছড়িতে সফলভাবে Avocado চাষ করা হচ্ছে।এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় সফলভাবে Avocado উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে।জুন জুলাই মাস হচ্ছে অ্যাভোকাডো চাষের গুরুত্বপূর্ণ সময়। এবং এর ভালো ফলনের জন্য যা যা করণীয় তা করতে চাষীরা উদ্যোগী হয়ে উঠেছেগোলাম কিবরিয়া নামে একজন শিক্ষক মেক্সিকান জাতের অ্যাভোকাডো চাষের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এক সুপারশপের কর্মকর্তার মতে দেশি অ্যাভোকাডোর তুলনায় বিদেশীঅ্যাভোকাডোর চাহিদা বেশি। কারণ বিদেশি অ্যাভোকাডো গুলোর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি মনে করা হয়। মূলত এর পুষ্টিগুণের কথা চিন্তা করেই এবং দামের কারণে ও এর চাহিদা থাকায় বাংলাদেশের মানুষ এই ফল চাষে উৎসাহী হয়ে উঠেছে।বাংলাদেশে এই ফলের দাম কত? বাংলাদেশে এই ফলের দাম কত? অ্যাভোকাডোর চাহিদা বেশি থাকায় এটি কেজিতে ৯০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়ে থাকে।

তবে দেশি Avocado ফলের দাম কম।কেনার পরে আপনি এটিকে চাইলে সংরক্ষণও করতে পারেন। আপনি ফ্রিজে দুই তিন দিনের জন্য রাখতে পারেন। এবং কাঁচা অবস্থায় একটি কলার সাথে প্যাকেটে মুড়িয়ে ফ্রিজে রাখতে পারেন। কলা ইথিলিন গ্যাস নির্গত করে যা আছে যে কোনো ফলকে দ্রুত পারতে সাহায্য করে। দুই থেকে তিন দিনের বেশি এটিকে রাখা উচিত নয়। তাহলে এর খাদ্যগু পুষ্টিমান কমে যায়। মূলত এর পুষ্টিগুণের জন্যই বাংলাদেশে এর চাহিদা রয়েছে।

পুরুষ ও মহিলাদের শরীরের জন্য কতটা লাভবান

পুরুষ ও মহিলাদের শরীরের জন্য কতটা লাভবান? এটা উভয় এর শরীরের জন্যই অনেক লাভবান। এতে রয়েছে পটাশিয়াম। যারা শরীরে দ্রুত রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দ্রুত রক্ত সঞ্চালন পুরুষদেরর যৌন ক্ষমতাকে বাড়ায়।এবং মহিলাদের যোনিকে আরও বেশি সংবেদনশীল ও প্রতিক্রীয়াশীল করে তোলে। তাই প্রত্যেক দিনের খাবারে আপনাকে অবশ্যই এটি রাখার চেষ্টা করতে হবে।

এর ফলকে পুরুষ থেকে শুক্রাণু বাড়ানোর জন্য পাওয়ার হাউস বলা হয়ে থাকে। এতে রয়েছে ভিটামিন ই, জিংক, উচ্চ মাত্রার ফোলেট পরিমাণ এবং গতিশীলতাকে বৃদ্ধি করে তোলে।ফোলেট স্পার্মটেজেনোসিস ও ডিএনএ সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মূলত এর গুনাগুন গুলো শুক্রাণু কোষের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করে। এই ফলের এসব গুণাবলের জন্যই ডাক্তাররাও এটাকে খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

শেষকথাঃ অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন

চর্বিযুক্ত খাবার হবার জন্য অনেক সময় এটি  সমালোচিত হলেও অ্যাভোকাডো মূলত পুষ্টিকর খাবার হিসেবই খ্যাত সারা দেশে।অ্যাভোকাডোর স্বাস্থ্যকর নানা গুনাগুনের জন্য এটি বিখ্যাত হলেও ওই সকল কারণে যে একমাত্র সমাধান ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়।এবং আমি নিজেও কখনো সব কিছু অন্যের জন্য ভাল হলেই  তা গ্রহণ করি না।অবশ্যই আপনার মধ্যে যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই আগাবেন।মনে রাখবেন সব ভালই কিন্তু সবার জন্য ভাল না।

অ্যাভোকাডো কী ও এর গুনাগুন জানার পরে এই ফল আমার কাছে অনেক প্রিয়। উপরের বর্ণিত এর স্বাস্থ্য উপকারিতা ও পুষ্টিমান জানার পরে আপনার কাছেও এই ফল অনেক বেশি পছন্দের ও উপকারী হয়ে উঠবে। এই ফলে রয়েছে ৭২ শতাংশ পানি এবং রয়েছে স্বাস্থ্যকর উপাদান। দায়ের ক্যালরি বেশি হলেও এবং এটি স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎসের কারণে ওজন কমানো থেকে শুরু করে হৃদরোগের জন্য অনেক উপকারী। এবং এটি আপনার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রওশন ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url