চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল। কারি পাতার
ব্যবহারে আপনি পাবেন মাথা ভর্তি কুচকুচে কালো চুল। কারি পাতার ব্যবহারে আপনার চুল
হবে লম্বা।কারি পাতা কয়েকটি নিয়মে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পাতার ব্যবহার
গুলো পুরো আর্টিকেল পড়লে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন।
কারি পাতার রস কিভাবে মাথায় দিবেন এবং এর প্রভাব কতটুকু তা আপনাকে অবশ্যই
ভালোভাবে জানতে হবে। কারি পাতার হেয়ার প্যাক রয়েছে। হেঁটে চুলের জন্য অত্যন্ত
উপকারী। কারি পাতা মূলত এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। খুশকি সহ যেকোনো সমস্যার সমাধানে
কারি পাতা অনন্য।
সূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
- চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর উপকারী দিক
- কারি পাতা ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম
- চুলের যত্নে কিভাবে খাদ্য তালিকায় কারি পাতা যোগ করবেন
- চুলের যত্নে কারি পাতার জল
- কারি পাতা কোথায় পাবেন
- কারি পাতার চা কিভাবে চুলকে শক্ত ও মজবুত করে
- কারি পাতার অপকারিতা
- লেখকের মন্তব্যঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর উপকারী দিক
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর উপকারী দিক গুলো অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও সুন্দর চুল পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই চুলের যত্নে কারি পাতা যোগ
করতে হবে। এই পাতায় রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার।। যা আপনার চুলকে করে তুলবে অন্যদের
থেকে অনন্য সুন্দর। কারি পাতার যেমন উপকারে দিক রয়েছে তেমন রয়েছে ব্যবহারের
কয়েকটি নিয়ম। চলুন প্রথমে আমরা জেনে নিই এর উপকারি দিকগুলো।
- কারি পাতা চুল পড়া বন্ধ করেঃ বর্তমান সময়ে চুল পড়া সকল মানুষের একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি আমি কেনা পরিত্রাণ পেতে চাই। তাই চুল পড়া বন্ধে আজকে থেকেই ব্যবহার করুন কারি পাতা। এই কারি পাতা আপনি নারিকেল তেলের সাথে ফুটিয়ে ছেকে নিয়ে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। অথবা কাঁচা দুধের সাথে কারি পাতা পেস্ট করে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সেটি চুলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
- চুলের অকালপক্কতা রোধ করেঃ বর্তমান সময়ে ছোট বড় সকলে আরেকটি সাধারণ সমস্যা হলো চুল পেকে যাওয়া। যার ফলে বয়স্ক মানুষকেও দেখতে বয়স্ক লাগে। আমরা সকলেই রূপ ও যৌবনকে ধরে রাখতে চাই। তার জন্য একজন মানুষের স্বাস্থ্যকর চুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই চুলের অকালপক্কতা রোধে আপনি পেঁয়াজের রসের সাথে কারি পাতার রস মিশিয়ে তুলে দিয়ে 20 মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন।
- খুশকির সমস্যা দূর করেঃ অনেকের মাথাতে খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে শীতকালে আমরা সকলেই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি। তাই এই সমস্যা দূর করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে কারি পাতার ব্যবহার নিয়মিত করতে হবে। কারণ কারি পাতায় রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ইনফ্লামেটরি। যে আপনার চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। যার ফলে চুল থেকে খুশকি দূর হয়।
- কারি পাতা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করেঃ বর্তমান সময়ে সকলের চুল থেকে উঠে যাচ্ছে। কিন্তু যে পরিমাণে চুল উঠছে সেই পরিমাণে নতুন চুল গজাচ্ছে না। এতে আমাদের সকলের জল পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এটা চুলের সৌন্দর্য্যকে বিনষ্ট করে দিচ্ছে। তাই আপনি কারি পাতাকে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিয়ে অল্প পরিমাণে টক দই মিশে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেটি মস্কের মতো করে চুলে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। পরে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এতে আপনার নতুন চুল গজাবে এবং চুল বৃদ্ধি পাবে।
- চুলের আগা ফাটা রোধ ও চুলকে ঝলমলে করেঃ রুক্ষ শুষ্ক তলের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো চুলের আগা ফেটে যাওয়া। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করতে হবে। কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে যা আপনার রুক্ষ শুষ্ক করে তুলবে প্রাণবন্ত ও ঝলমলে। এতে আপনার চেহারাও হয়ে উঠবে ঝলমলে। কারি পাতা পেস্ট করে ডিমের সাদা অংশের সাথে মিশিয়ে এটি চুলে লাগালে চুল ঝলমলে হয় এবং চুলের আগা ফাটা রোধ করে।
- চুলের গোড়া শক্ত করে পাতলা হাওয়া থেকে দূরে রাখেঃ কারি পাতায় রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন। এবং আরো রয়েছে প্রোটিন। যা চুলের জন্য অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। কারি পাতায় থাকা এই উপাদানগুলি চুলের ফলিকল কে শক্তিশালী করে তোলে। চুলের গোড়া শক্ত করে এবং চুলকে পাতলা হওয়া থেকে বিরত রাখে। চুলের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই চুলের গোড়া শক্ত হওয়া একটি প্রয়োজনীয় জিনিস। তাই আপনার নিয়মিত কারি পাতার ব্যবহারের চুল হয়ে উঠবে শক্তিশালী।
কারি পাতা ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম
কারি পাতা ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। এসব নিয়ম মেনে কারি পাতা ব্যবহার
করা উচিত। চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অনেক উপকারী বলে যেমন খুশি তেমন করে
এটি ব্যবহার করা যায় না। অবশ্যই কিছু নিয়ম কানুন মেনে আপনাকে ব্যবহার করতে
হবে। তবেই আপনি এর ভালো ফলাফল পাবেন। কারি পাতা বেশ কয়েকটি উপাদানের সাথে যোগ
করে বা মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং এই নিয়মগুলো মেনে চুলের যত্ন
নিলেই আপনি পাবেন ১০০ ভাগ ফলাফল। চলুন কারি পাতা ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম আমরা
জেনে নিই।
- দই ও কারি পাতার পেস্টঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার হিসেবে দই ও কারি পাতার পেস্ট অনন্য। কারি পাতা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে দুইটা চামচ কারি পাতার সাথে দুই চা চামচ টক দই মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এটি মাথায় ও চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে দিয়ে ত্রিশ মিনিট রেখে দিতে হবে। এতে মাথায় জমে থাকা ময়লা ও মরা চামড়া উঠে পরিস্কার হয়ে যাবে। চুল হবে ঝলমলে ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল। মাথার খুশকি দূর হবে
- কারি পাতা ও নারিকেল তেলঃ চুলের ভলিউম বাড়ানোর জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করতে হয়। কারণ এদের রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলের ভলিউম বাড়িয়ে চুলের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। একটি কড়াইয়ে আড়াইশ গ্রাম তেল নিন এবং তাতে এক মুঠো কারি পাতা ফেলে দিন। অল্প আঁচে ততক্ষণ পর্যন্ত জাল দিন যতক্ষণ না কারি পাতাগুলো কালো হয়ে আসে। তারপর থেকে নিয়ে মাথাতে আলতোভাবে মেসেজ করুন ৩০ মিনিট ধরে। এক ঘন্টা বা পরের দিন সকালে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
- আমলকি,কারি পাতা ও মেথিঃ আলাদা ভাবেও মেথি,কারি পাতা ও আমলকি চুলের জন্য অনেক উপকারী। এই কথাটি আমরা কমবেশি সবাই জানি। । এই তিনটিকে যখন একসাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করা হয় তখন তার চুলের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হয়ে ওঠে। এক মুঠো কারি পাতা ও হাফ কাপ মেথির সাথে ছয় সাতটি আমলকি কুচি করে মিশিয়ে দিন। এরপর পেস্ট করে নিতে হবে। এই প্যাক চুলে মিশে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এর ফলে চুলের গোড়া শক্ত হবে এবং চুল দ্রুত বাড়বে।
- পেঁয়াজ ও কারি পাতাঃ পেঁয়াজের রস আমরা জানি চুলের জন্য বেশ উপকারী। কিন্তু এটি যখন কারি পাতার সাথে মিশে যায় তখন এর শক্তি আরো দেখুন হয়ে যায়। চুল পড়া বন্ধ করতে এই এই প্যাকের কোন জুড়ি নেই। গাড়ি পাতা পেস্ট করে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে নিন। এরপর চুলের গোড়া ও চুলে লাগিয়ে রাখুন আধা ঘন্টা। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। চুল হয়ে উঠবে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল ও ঘন।
চুলের যত্নে কিভাবে খাদ্য তালিকায় কারি পাতা যোগ করবেন
চুলের যত্নে কিভাবে খাদ্য তালিকায় কারি পাতা যোগ করবেন? ধনেপাতার মতো
কারি পাতার নিজস্ব একটি ফ্লেভার আছে। কারি পাতা বিভিন্ন রান্নাতে ব্যবহার করা
হয়। বিশেষ করে ভারতে কারি পাতার ব্যবহার অনেক বেশি। তারা তাদের বিভিন্ন
খাবারে ফোড়নে কারি পাতা যোগ করে। বিভিন্ন ঝোলের তরকারিতেও কারি পাতা ব্যবহার
করা হয় বলে এর ইংরেজি নাম কারি লিফ। এটি মিষ্টি নিম পাতা নামেও পরিচিত।
অনেকেই এই কথা খালি পেটে চিবিয়েও খেয়ে থাকে। কারি পাতায় রয়েছে সালফার
গঠিত এক ধরনের তেল। যা চুল কেন আপনার ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।
এই পাতা কচলালে এর মধ্য থেকে গোলমরিচ,লবঙ্গ,আদা ইত্যাদি মসলার মিশ্রিত এক
ধরনের সুন্দর ঘ্রাণ বের হয়। এই ধরনের জন্যই রান্নাই মসলা হিসেবে কারি পাতা
ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কারি পাতা খিচুড়ি রান্নাতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যা আপনার রান্না কে করে তুলবে অন্যদের থেকে ভিন্ন। বিভিন্ন খাবারের মধ্য
দিয়ে গুণাবলী যখন আপনার শরীরে প্রবেশ করবে তখন আপনার চুল হয়ে উঠবে ভেতর
থেকে স্বাস্থ্যজ্জ্বোল। আপনি যখন খাবারের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন
প্রয়োজনীয় পুষ্টি আপনার শরীরকে দিবেন। তখন সেটি আপনার প্রকল্পের সঠিক
পরিচর্যা করবে।
বিদেশে এই পাতা ব্যবহার করা হয়। কম্বোডিয়াতে এই পাতা খোলা আগুনে মুড়মুড়ো
করে সেঁকে নিয়ে গুঁড়ো করে নেয়া হয়। এবং সেই গুঁড়ো টক এক ধরনের
স্যুপে তারা খায়। আপনিও চাইলে বাড়িতে বিভিন্ন সবজি টমেটো ও কারি পাতার
গুঁড়ো দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খেতে পারেন। যা আপনার চুলের সাথে সাথে আপনার
ত্বকের ও যত্ন নেবে। এতে রয়েছে ভেষজ ঔষধি গুণ। এই পাতার শেকড়ও অনেক কাজে
লাগে। এই পাতা খেলে বমি ভাব দূর হয়। তাই অবশ্যই চুলের যত্নে আপনি
খাবারে এইভাবে কারি পাতার যোগ করে আপনি খেতে পারেন এবং এর পুষ্টিগুণ আপনার শরীরে পৌঁছে দিতে পারেন।
চুলের যত্নে কারি পাতার জল অনেক উপকারী। এটি চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে।
কারি পাতার জল চুলের ফলিকল মজবুত করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি
চুলকে অকালপক্কতা থেকে রক্ষা করে স্ক্যাল্পের পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।
মানসিক চাপ কমাতে কারি পাতার জল অনেক উপকারী। আপনার শরীর মন যখন ভালো থাকবে
তখন চুল ও ত্বকও ভালো থাকবে।
আরও পড়ুনঃ ত্রিফলা কী ও এর উপকারীতা
তাই মানসিক চাপ কমাতে আপনার অবশ্যই কারি পাতার জল পান করা উচিত। দিনের
শুরুতেই এই পানি পান করতে হবে। এতে স্নায়ু স্থিতিশীল হয়। একটি পাত্রে এক
কাপ পানিতে হাফ কাপ কারি পাতা নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এরপর ছেঁকে নিয়ে
ঠান্ডা করে এই পানি পান করুন। এবং চুলের স্ক্যাল্পে স্প্রে করুন। এটি
আপনার চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতাকে দূর করে। এর নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের
ফ্রিজিং কমে যাবে।
কারি পাতা কোথায় পাবেন
কারি পাতা কোথায় পাবেন? আপনি চাইলেই কারি পাতা সবখানেই পাবেন না।
পাতা আমাদের দেশীয় পাতা নয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় মসলা বা সবজির
দোকানগুলোতে এটি পাওয়া যায়। তবে আপনি চাইলে যে কোন নার্সারি থেকে এর একটি
চারা গাছ বাড়িতে এনে টবে মাটিতে লাগিয়ে নিজের রান্না, চুলের ও ত্বকের যত্নে
ব্যবহার করতে পারেন। সবরকম আবহাওয়াতে কারি পাতা জন্ম নিতে পারে। আর
যাদের কাছে গাছ মানুষ করাটা ঝামেলার মনে হয় তারা এতে বিভিন্ন সুপার শপ থেকে
কিনে নিয়ে এসে ব্যবহার করতে পারেন।
তবে জেনে রাখতে হবে যে গাছ থেকে ছেড়ার পরে এই পাতা বেশিক্ষণ সতেজ থাকে না।
এবং আপনি যদি চান রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু এতে কারি পাতার
পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ থাকে না। এই পাতার টাটকা ব্যবহারের ফলে আমরা এর পুষ্টিগুণ
পুরোপুরি পেতে পারি। সংরক্ষণের ফলে কারিপাতার ঘ্রাণ কমে যায়। কারি পাতা সব আবহাওয়াতেই মানিয়ে নিতে পারে। সেহেতু এই পাতার গাছ
লাগিয়ে নেয়ায় উত্তম। যা আপনি চুল ও ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নিজেকে
সুন্দর করে রাখতে পারেন।
কারি পাতার চা কিভাবে চুলকে শক্ত ও মজবুত করে
কারি পাতার চা কিভাবে চুলকে শক্ত ও মজবুত করে? চুলের যত্নে কারি পাতার
ব্যবহার হিসেবে আপনার কাছে হয়তো এই চায়ের কথা শুনে খুব অবাক লাগছে। কিন্তু
এই চা পান করলে যেমন আপনার চুল সুন্দর হবে তেমনি আপনাকে ভেতর থেকে সুন্দর করে
তুলবে। এই চা নিয়মিত পানে আপনি হয়ে উঠবেন সুন্দর চুলের অধিকারী। শুধু
সুন্দর চুল নয় এটি আপনাকে সুন্দর ত্বকও উপহার দেবে।
যাদের চুল উঠে যাচ্ছে, অল্প বয়সে পেকে যাচ্ছে, চুলের রুক্ষতা বেড়ে
গেছে,খুশকির সমস্যা রয়েছে, চুলের ভলিউম কমে গেছে তাদের জন্য সুখবর। আপনি যা
নিয়মিত পান করুন সকল সমস্যার সমাধান পাবেন। হয়তো একশভাগ কাজ করবে না।
কিন্তু বর্তমান অবস্থা থেকে আপনাকে কিছুটা উন্নতি দিবে। এটিই বা কম কিসে। এক
কাপ গরম পানির সাথে পাঁচ-ছয়টি কারি পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়ে তাতে
সামান্য লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করুন।
কারি পাতার অপকারিতা
কারি পাতার অপকারিতা তেমন কিছু নেই। অর্থাৎ অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার
করলে আপনি এর সুফল এর জায়গায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই কারি পাতা
ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ কোনো সমস্যা বা এলার্জি
জনিত কোন অসুবিধা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বা এটি খাবার পরে অথবা
চুলে ব্যবহারের ফলে আপনার কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা খেয়াল
রাখুন।
যদি কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে অথবা কোন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়
তাহলে অবশ্যই আপনি ব্যবহার করা বন্ধ করুন। অথবা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের এটি খাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি
খাওয়া না হয়। কারণে এতে এমন একটি উপাদান রয়েছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
করে। এটি বেশি পরিমাণে খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে যায়। যা ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য মোটেও ভালো নয়। তাই এটিকে খাবার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন
বেশি খাওয়া না হয়।
লেখকের মন্তব্যঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
আপনি যদি চুলের যত্ন নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি মূলত আপনার জন্য।
উপরের বর্ণিত সকল কিছু যদি আপনি ঠিকমতো অনুসরণ করেন, তাহলে আপনি আপনার চুলের
অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি করতে পারবেন। কারি পাতা শুধুমাত্র চুলের জন্যই
নয় এটি আপনার স্বাস্থ্য ও ত্বকের নানাবিধ সমস্যার সমাধান করে থাকে। কারি
পাতায় রয়েছে আয়ুর্বেদিক ভেষজ গুণাবলী।
যা আপনার চুলকে গড়ে তুলবে সিল্কি, ঝলমলে ও ঘন কালো। এমন চুল কে না চাই? তাই
আপনি আজকে থেকে শুরু করতে পারেন কারি পাতার ব্যবহার। আমি নিজেও তেলের সাথে
মিশিয়ে পাতা ব্যবহার করে থাকি। ১০০ ভাগ সমাধান না পেলেও আমার চুলের অনেকটা
উন্নতি হয়েছে। আপনার আরও বেশি হতে পারে। যে কোন জিনিসের ফলাফল সবার কাছে এক
রকম হয় না। তাই সতর্কতা অবলম্বনের সাথে আপনি এই কারি পাতা আজই ব্যবহার শুরু
করুন।
রওশন ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url